অনুগল্প - সোমা গুপ্ত


অমিল অঙ্ক


পঁচিশ বছর আগে।


"খেয়ে না খেয়ে গহনা বিক্রি করে এত কষ্ট করে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালাম। ছয়মাস ধরে বেকার বসে আছিস এখনো একটা চাকরী জোগাড় করতে পারলি না। চক্রবর্তী দার ছেলের পাশ করার সাথে সাথেই কি রকম চাকরী হয়ে গেলো।  আমাদেরই কেবল পোড়া কপাল। সায়ক মনে মনে ভাবতো পোড়াকপাল ত তার। বাবা মা তার মনোকষ্ট টা বুঝতেই চাইছে না। ছেলেদের যে কাঁদতে নেই। ছেলেদের সাথে সমাজের এ এক অলিখিত চুক্তি। এসেছিল সায়কের চাকরীর চিঠি। " মা, বাবা আমি একটা চাকরী  পেয়েছি। " বাবা প্রশ্ন করেন মাইনে কত?" সায়কের মাইনের কথা শুনে তার মা ঝাঁঝালো স্বরে বলেছিলেন " চক্রবর্তী দার ছেলের মাইনে কিন্তু আরো বেশী। সায়কের কাকা  বাড়িতে মিষ্টি এনেছিলেন সেদিন। তিনি মনে মনে বলেছিলেন " একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।  শুধু সময় বদল কিন্তু ভিলেন চরিত্র দুজন একই আছে। উনিও ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একবছর এই গঞ্জনা সহ্য করেছিলেন।

                     

বর্তমান।


" সায়ক ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে না তুই তা মেনে নিলি?" বাবার প্রশ্নের উত্তরে সায়ক বলেছিল " সোনার খাঁচায় মনবন্দী পাখির ডানাঝাপটানোর থেকে মুক্ত আকাশে ইচ্ছামত উড়ে বেড়ানো কে বেঁচে থাকা বলে। তোমাদের বাক্যবাণ আমার অন্তরে বিঁধত। বাবা আত্মার আত্মাকে আত্মজ বলে কিন্তু তুমি কিংবা মা কেউ দাওনি আমার আত্মাকে শান্তি। আমার আত্মার আত্মাকে আমি বাঁচতে দিয়েছি মাত্র।তাকে উপহার দিলাম এক শান্তির জীবন। একই পদ্ধতিতে সব হিসাব মেলে না বাবা।"

Comments