গুচ্ছ কবিতা - শান্তনু পাত্র


সমর্পিতা - ১


তোমার সামনে গেলে প্রতিদিন সুন্দর হয়ে উঠি

টলটলে জলের নিকট শত পাপড়ি মেলে দাঁড়াই


শরীরে নেই কোনো ক্ষত

পুড়ে গেছে সব অসুখ

দু-চোখ তোমায় খোঁজে


আমি অপেক্ষায় আছি, হয়তো তুমিও...

একদিন আমার লুকানো আগুন চেয়ে নেবে তুমি


আর আমি জন্মদিনের মোমবাতির মতো

নিভে যাবো সোহাগে আদরে

তোমার ঠোঁটের খুব কাছে এসে...

তোমার বুকের খুব কাছে এসে...



সমর্পিতা - ২


পরের কোনো এক জন্মে

তুমি ফিরে আসবে কথা দিয়েছো সমর্পিতা


যদিও আমি পরজন্মে বিশ্বাস করিনি

তবু মানুষ প্রেমে পড়লে

ভ্রমকেও সত্য মনে হয়।

এর নামই বোধহয় প্রেম!


একটা সময় পর যখন তুমি ক্লান্ত হয়ে পড়বে

একটা সময় পর যখন তুমি একাকী বোধ করবে

চোখ বন্ধ করলে

জীবনের টুকরো টুকরো ভুলগুলি যখন দেখতে পাবে

তখন নির্জন স্বচ্ছ আয়নার পাশে দাঁড়ালে

দেখবে ঠিক তোমার পাশেই দাঁড়িয়ে আছি আমি


তখন যাবতীয় অলংকার খুলে ফেলে

যাবতীয় লজ্জাবস্ত্র খুলে ফেলে ফেলে

এসো এজন্মেই, এসো সমর্পিতা।


জেনে রেখো, পরজন্ম বলে কিছু হয় না।




সমর্পিতা - ৩


তোমাকে কী ভীষণ ভালোবেসেছি

সে তোমার চোখ জানে।


তোমাকে দেখলে আমার মন ভালো হয়ে যায়

তোমার সাথে কথা বললে সব দুঃখ ভুলে যাই

তোমার মধ্যে আমি হারানো মায়ের গন্ধ খুঁজে পাই

তোমার মধ্যে আমি খুঁজে পাই হারিয়ে যাওয়া প্রেম

তাই তোমাকে সযতনে তুলে রেখেছি এ বুকে।


এসো, পাশে এসে বসো,

বুকে রাখো হাত

ডুবো, আরও গভীরে যাও

সমর্পিতা হয়ে দেখো

কী ভীষণ এক সমুদ্র পুষে রেখেছি এ বুকে...




সমর্পিতা - ৪

 

তোমার হৃদয়জুড়ে আবছা কুয়াশা

তোমার ফুসফুসজুড়ে ধূসর ধোঁয়া।


তাই আমি

তোমার হৃদয় বা ফুসফুস হতে চাইনি।


তোমার অক্সিজেন হতে চেয়েছি

যা প্রতি শ্বাসে টেনে নেবে তুমি

আর আমি মিশে যাবো তোমার রক্তে রক্তে,

                          ছড়িয়ে পড়ব শরীরময়...

Comments

  1. প্রতিটি কবিতাই সুন্দর

    ReplyDelete
  2. সবকটি ভীষন গভীর

    ReplyDelete

Post a Comment