গতি
রাম একবার ঘরে যাচ্ছে আর বাইরে আসছে আর বারে বারে ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। হাতে আর সময় বেশি নেই। নটা কুড়িতে ট্রেন। বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাথে প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া আর বিদ্যুৎতের ঝলকানি। মোবাইলের Towerও মনে হয় ঝড়ে পরে গেছে।কোন Connectivity নেই। Station এ ফোন করে Train এর খবর নেবার ও কোন উপায় নেই। অনেক কষ্টে Reservation পাওয়া গ্যাছে। Auto বলা ছিল। কিন্তু ঝড় আর বৃষ্টির জন্য মনে হয় আসতে পারছে না। Station এ যেতে আধ ঘন্টার মত লাগবে। না আর দেরি করা ঠিক হবে না। প্রায় আটটা বাজে। রাম ঘরে ঢুকে বাবা মাকে প্রণাম করে ছাতা মাথায় Bag পিঠে হাটা দিল। মোড়ের মাথায় পচাদার দোকানের কাছাকাছি পৌঁছতেই প্রচন্ড শব্দ করে কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়ল। সাথে সাথে Load shedding হয়ে গেল। আর একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল উঠে যাবে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এখন মোবাইলের Torchই ভরসা। রাম কোনো রকমে পচাদার দোকানের বারান্দায় দাড়াল।পচদার দোকান বন্ধ। শুধু পচাদা না, মোড়ের সব দোকানই বন্ধ। এই মোড় দিয়েই Station এ যাবার Auto গুলো যায়। কিন্তু এখন কোন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে চলেছে আর রামের Tension বাড়ছে। কারণ কাল রাতে পৌছে পরশু সকালে Office এ joining report, করতে হবে। যদি করতে না পারে! না আর ভাবতে পারছে না। ঘড়িতে নটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। আর কোন আশা নেই। হটাৎ অনেক দুরে একটা আলো দেখতে পেল। খুব দ্রুত আলোটা মোড়ের দিকে এগিয়ে আসছে।কাছাকাছি আসতেই বুঝতে পারল ওটা রাজার বুলেট। রাজা মানে এই তল্লাটের ত্রাশ। খুন, ডাকাতি, তোলাবাজি, প্রোমোটারি সবেতেই ওস্তাদ। এলাকার মানুষ কিছু বলতে সাহস পায়না। রাম ওর সাথে কোনো দিন কথা বলেনি। ঘৃনাও করে। রাজা প্রচন্ড গতিতে সামনে দিয়ে চলে গেল। অবশ্য রাজা বাইক কখনই আস্তে চালায়না। বাইকের আওয়াজেই বোঝা যায় রাজা আসছে। রাম বুঝতে পারছেনা কি করবে। এই সময় দেখতে পেল রাজার বাইকটা প্রচন্ড গতিতে ফিরে আসছে। এসে রামের সামনে ব্রেক করে দাড়িয়ে পরল। ভয়ে রামের গলা শুকিয়ে কাঠ।ভাবছে খুন বা ছিনতাই করবে না তো? এই সব ভাবার মাঝেই রাজা বলে উঠল রামদা এই ঝড় জলের রাতে তুমি এখানে দাড়িয়ে আছ কেন? রাম ওর কথা শুনে প্রাণে জল পেল। আস্তে আস্তে রাম পুরো ব্যাপারটা রাজাকে খুলে বলল। শুনে রাজা বল্ল, আমি রাজা, আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে Station এ Train ঢোকার আগেই পৌছে দেব কিন্ত আমার একটা অনুরোধ তোমাকে রাখতে হবে। আমার Helmet আর আমার Raincoat তোমাকে পরতে হবে। কারণ তুমি চাকরিতে Join করতে যাচ্ছ। বৃষ্টিতে ভিজে যদি তোমার অসুখ বিসুখ কিছু হয়ে যায় তাহলে চাকরিতে যোগ দেবে কি করে? কি আর করে রাম। বাধ্য হয়ে রাম রাজার Raincoat আর Helmet পরে বাইক এর পেছনে বসে পড়লো। বাইক Start করার সময় রাজা বল্ল, রামদা তুমি একদম ভয় পাবে না। তুমি শুধু আমাকে ভাল করে ধরে বসবে।
তারপর দেখবে বাইক চালানো কাকে বলে। পুলিশ আজ পর্যন্ত রাজার টিকি ছুতে পারেনি। সত্যিই বাইকে চড়ে বুঝতেই পারছেনা বাইকে না এরোপ্লেনে বসে আছে। রাজা বাইকের গতি যত বারাচ্ছে রাম তত শক্ত করে চেপে ধরছে। ওই তো Station এর আলো দেখা যাচ্ছে। আস্তে আস্তে Station এর আলো স্পষ্ট হচ্ছে। যাক তাহলে সময় মত Stationএ পৌছাতে পারল। আরে Station এর সামনে রাস্তার উপর ঝড়ে বিরাট একটা গাছ পড়েছে। রাম ভয়ে চিৎকার করে উঠল, রাজা সামনে কিন্তু কথা শেষ করার আগেই যা হবার হয়ে গেল। রাজার বাইক এবার সত্যি সত্যিই এরোপ্লেন হয়ে গেল। রাম বাইক থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেল। মাথাটা গিয়ে লাগল স্টেশনের গাড়ি বারান্দার খুটিতে। কিন্তু রাজার Helmet ওকে বাচিয়ে দিল। কিন্তু রাজা কোথায় গেল ? রাম আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়াল। ওই তো রাস্তার উপর আলো দেখা যাচ্ছে। ওটা কি রাজার বাইকের Headlight এর আলো? রাম আস্তে আস্তে আলোর দিকে এগিয়ে যায়। হ্যাঁ, রাজার বাইকটাই পরে আছে। বাইকের Start ও বন্ধ হয়নি তাই Headlight জ্বলছে। কিন্তু রাজা গেল কোথায়? ওইতো Headlight এর আলোতে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। ও তাড়াতাড়ি সেদিকে এগিয়ে যায়। সামনে গিয়ে দেখে রাজা উপুর হয়ে পরে আছে। মাথাটা একদিকে হেলানো। নাক, কান, মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত পড়ে চারদিক ভেসে যাচ্ছে। রাম বোকার মত দাড়িয়ে পরে। কি করবে বুঝে ওঠার আগেই Station এর Loudspeaker থেকে ঘোষনা ভেসে এলো "একটি বিশেষ ঘোষনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য রাতের সমস্ত ট্রেন বাতিল করা হল, Attention please......................
Khub sundor hoeche
ReplyDeleteইংরাজি শব্দ গুলো বাংলায় লিখে দিলে ঠিক হতো l
ReplyDelete