গদ্য - মৃণালিনী


সমর্পণ


এমন বৃষ্টির দিনে মিস্টি রোদ উুঁকি দিলে চোখের কোন ঘেঁষে নেমে যায় ঘোর। দূরত্ব মাপতে হাওয়ায় রিখটার স্কেল, থার্মোমিটারের লজ্জিত পারদ নেমে যাচ্ছে তলানিতে। হাসছে মন্দিরের প্রত্যেকটি রোমকূপ। দূরত্বের বেড়াজালে রোদছায়ায় ঘুরছে ধূলোময় স্মৃতিকণা, রোজের স্নান শেষে তুমিও সব ভুলে নতুন, নতুনে নতুন পরিক্রমা। মিস্টি রোদের ছায়ায় একটি ছায়া ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছে, ছায়ার পায়ে পায়ে চূর্ণবিচূর্ণ একরৈখিক আলপনা।


আসলে এই মন খারাপের দিনগুলোতে আমরা ভালোবাসা খুঁজি না। খুঁজে বেড়াই বোধিবৃক্ষ, তার ছায়ায় খুঁজে বেড়াই ঘন ছায়া অন্ধকার। যে আপাদমস্তক ডুবিয়ে রাখবে নিজস্ব আয়নার প্রতিফলনে; সামনে ও মুখোমুখি শুধু নিজের সত্ত্বার আধিপত্য। আসলে আমরা ভালোবাসা খুঁজি না, খুঁজে বেড়াই নিজস্ব প্রতিকৃতি; অথচ কুমোরটুলিতে কোনদিন খোঁজ করে দেখি না।


অনেক তো হলো, এভাবে নিজের সঙ্গে খেলতে খেলতে পানসে মন। মাংসপিণ্ড হারিয়ে গিয়েছে খেলায়। মূর্তিতে গড়তে চেয়েছিলাম তোমায়, আস্তে আস্তে দেবতার আসন জুড়ে তুমি, যৌনতার অনুরাগ বিরক্তিময়। তাই তো, কায়া বিচ্ছিন্ন ছায়ায় শব্দের অলংকারে বেজে ওঠে শঙ্খধ্বনি। বুঝলাম, তোমারও বিসর্জনের সময় এসেছে। ভালোবাসারও বিসর্জন প্রয়োজন হয় আধারের অভাবে...নাকি এ আমার গৈরিক আত্ম সমর্পণ!

Comments