কবিতা- শ্যামলেন্দ্র চক্রবর্তী


ভয় 

  

চারদিক শুনশান , চাঁদ মরে যাচ্ছে পেছন আকাশে
পাতলা অন্ধকার , বছর পঞ্চাশ আগের কঞ্চিতে বাঁশে
তুমি কি শুনতে পাও সারেঙ্গীর বিলাপ, তানপুরার সুর
সরু কয়েকটি আঙ্গুল ছুঁয়ে যায় ভুরু বরফে ভরপুর ,
কিছু ভয় পেও তখন , বুক দুরুদুরু , পিছিয়ে এসো 
দুঃসাহসের চেয়ে একটু নাহয় ভয়টাকে ভালোবেসো ,


গুরু মন্ত্রগুপ্তি দিয়েছেন , একটু ভয় পাওয়া ভালো 
স্বাস্থ্য সুস্থ থাকে , আগে পিছে যতই থাকুক কালো ।


উঠোন পেরিয়ে সোজা অন্দরমহল 
কার্নিশে ঝোলা পরগাছার দল  
পর্দানশীন অন্তরে ঢোকে না আলো 
সিঁড়ি ছুঁয়ে কিছু পায়ের চিহ্ন কিছু কালো 
এখানে শুরু মহাভারতের প্রথম অধ্যায় -


চারণভূমি থেকে প্রথম তলে উঠলে 
প্রসববেদনার শুরু ভীষ্ম ত্যাগ দেখালে 
বিরাটের ফাঁদে এক ঐতিহাসিক ভুল 
কিভাবে দায় এড়ায় পন্ডিত কূল 
নতুন কাহিনীর দুর্গন্ধ পাতায় পাতায় -


দ্রোণ রেখেছিল বৃক্ষশাখে পাখি 
বেঁচে দিল তাকে তস্করেরা নাকি 
ঘরে ঘরে অসম বয়সী অশ্লীল উদযাপন
মহাভারতের স্তম্ভে স্তম্ভে দুরন্ত কাঁপন 
সব নদী নিম্ন গতিতে মোহনায় যায় -
 

কিছু ধারা উচ্চ গতিতে চলে সংগোপনে 
তিন তল চার তলের সব স্থানে  
খিড়কি থেকে সিংহ দুয়ার ভাসে 
পাখপাখালি কাঁপে ত্রাসে 
ডোবে হস্তিনাপুরের আনাচ কানাচ 
প্রাসাদে সজ্জিত জলের মতো কাঁচ 
কাহিনী মহাপ্রস্থানের পথে এগিয়ে যায়- 


ভয় নাহয় পেও তখন , বুক দুরুদুরু, পিছিয়ে এসো 
দুঃসাহস নয় , ভয়টাকেই ভালোবেসো ।

Comments