কবিতা - ভূপালী রায়



কুচবিহার


ঐতিহ্যের ঘেরাটোপে, ইতিহাস  সাক্ষী হয়ে 
স্বমহিমায় উজ্জ্বল কুচবিহার,
পাহাড় মুকুট মাথে অরণ্য আভরণে 
এ শহর শান্তির আধার।
তোর্ষা ধরলা গদাধর রায়ডাক ,
বয়ে যায় নদী কালজানি,
পঞ্চ নদীর মিলিত স্রোতধারায় 
শ্যামল সবুজ দেশখানি।
মন্দির দেবালয়ে পবিত্র এ জনপদ 
মসজিদ মিনার ভরা স্থান ,
সকাল সন্ধ্যয় হরি সংকীর্তনে 
মিশে যায় নমাজ আজান।
হেথা নহবতের সুরে সুরে ঘুম ভাঙে মদনের
বেজে ওঠে মন্দিরে ঢাক,
শঙ্খ ঘন্টা বাজে মন্দিরে মন্দিরে
ভক্তরা আসে ঝাঁক ঝাঁক ।
 শহরের কেন্দ্রে সাগর দিঘীর জলে
পরিযায়ী পাখি উড়ে আসে,
শীতের তিন মাস পাখিদের বসবাস
দিঘীর জলেতে তারা ভাসে।
মাঠে ঘাটে প্রান্তরে রাখালিয়া বাঁশী বাজে
গান গেয়ে মাঝি দাঁড় টানে,
সন্ধ্যায় গ্রামবাসী দোতরার সুরে সুরে
মেতে ওঠে ভাওয়াইয়া গানে।
রাস পূর্ণিমা রাতে আলো ঝলমল করে
সেজে ওঠে কুচবিহার শহর,
ফুল সাজে সেজে ওঠে মন্দির বিগ্রহ 
পূজো হয় অষ্ট প্রহর।
অবিরত ঘুরে চলে উঁচু রাসচক্র 
মন্দির প্রাঙ্গণ মাঝে,
ছুটে আসে ভক্তরা পূণ্য লাভের আশে 
সকাল দুপুর থেকে সাঁঝে।
রাসমেলা শুরু হয় পূর্ণিমা রাত থেকে
পনেরো দিন এই মেলা চলে,
শিল্প পশরা নিয়ে দূর দূরান্ত থেকে
ব্যাবসায়ী আসে দলে দলে।
বেচাকেনার ফাঁকে ফাঁকে ভাব বিনিময় চলে
গড়ে ওঠে মিলন মেলা,
মেলা শেষ হয়ে গেলে চলে যায় নিজ দেশে
শেষ হয় কদিনের খেলা।

Comments