গদ্য - পাভেল রহমান



স্মরণ


তাঁরা কেউ নেই আমাদের পৃথিবীতে। দুজনাই বাংলাদেশের দুর্যোগে ছুটে এসেছিলেন ঢাকায় ! তেমনই একবার এসেছিলেন দুজনা ১৯৮৫ সালের প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের পরে উরিরচরে। সেই ঝড়ে চট্টগ্রাম উপকুলে কয়েক হাজার চরবাসির মৃত্যু হয়েছিলো। ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সাথে সফররত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট জয় বর্ধনের দ্বিপাক্ষিয়  মিটিং চলছিল দিল্লীতে। মিটিং চলাকালীন সময় খবর পেলেন বাংলাদেশের ঘূর্ণিঝড়ের। সেই খবরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী, শ্রীলংকার বর্ষীয়ান প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে এক কাপড়েই ছুটে এলেন প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিপদে। ঢাকায় বিমানবন্দর থেকেই উড়ে গিয়েছিলেন ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত উড়ির চরে। কাঁদা পানিতে পায়ে গামবুট পরে দুঃখী চরবাসিদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি আর জয় বর্ধন। আবার উড়ির চর থেকে ঢাকা বিমান বন্দর থেকেই ফিরেছিলেন দিল্লী। লাঞ্চ সেরেছিলেন আকাশে উড়ে উড়ে। 





পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তনের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হকও। তিনিও এসছিলেন ঢাকায়। আমরা উড়ির চরে উড়ে গিয়েছিলাম সাতটা হেলিকাপ্টারে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের ঐ ট্রিপে। সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লে জেনারেল এইচ এম এরশাদ। জিয়াউল হকও দুস্থ চর বাসীদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন। 


দুজনার এই ছবিটি ঢাকার সার্ক সম্মেলনে সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের। সার্ক ভুক্ত ৭টি দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সভায়  এসেছিলেন ভারত পাকিস্তানের তৎকালীন শীর্ষ দুই নেতা রাজীব গান্ধী জিয়াউল হক। ঢাকায় ঐ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁদের দুজনার মাঝ খানের চেয়ারে বসেছিলেন মিসেস জিয়াউল হক। মিসেস জিয়াউল হক অনুষ্ঠানে উপহার নিতে উঠে গেলেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়া এভাবেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলছিলেন। আমার তোলা ছবিটি সে সময় একটি গুরুত্ব পূর্ণ ছবি হয়ে যায়। আর এই ছবিটি আমাকে ভারতের প্রভাবশালী সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে কাজ জুটিয়ে দেয়। 


১৯৯১ সালের ২১ মে তামিল সুইসাইডাল কিশোরী ধনু তার পিঠের ব্যাগে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঐ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ভারতের সর্ব কনিষ্ঠ ৪০ বছর বয়সের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সহ ২০ জন মারা যান। 

 


ক্যাপশনঃ আমার তোলা এই ছবিটি সে সময় একটি গুরুত্ব পূর্ণ ছবি হয়ে যায়। ছবিটি আমাকে ভারতের প্রভাবশালী সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারে কাজ জুটিয়ে দেয়।

Comments