গুচ্ছ কবিতা - চৈতালি ধরিত্রীকন‍্যা


মহাকাল

         
অ‍্যামিবা থেকে আমি
শ‍্যাওলা থেকে শাল
প্রকৃতির আমি;আমার প্রকৃতি
কালের নাম আসলে বার্ষিকগতি





নতুন গন্ধ

   
হৈমন্তীর কুয়াশামুখ ঢেকেছে  তার নাভী
মধ‍্যাহ্ণে পরেছে সে হলুদ জামদানি 
পড়ন্ত সূর্যস্নাতা এখন সে 
সোনালি ভেলভেট জড়ানো তার সিন্দুক
উঠানে রেখেছে সে কেটে কেটে রাখা সোনা।


তবু হেমন্তিকা শিষ কুড়ানো ধান ভরে আঁচলে
নবান্ন আসলে তার মাটির ঘরের নাম...





সূর্যোদয়


দূরত্ব বজায় রেখে ফেস্টুনগুলি  
                 বসানো যেতে পারে 
কৌতুক হাসিতে তাচ্ছিল‍্য থাকে, 
                           থাকে থাক - 
এসময় নিজস্ব রঙ আরো 
                পাকা করা দরকার 
প্রয়োজনে সদুত্তর গুছিয়ে রাখা নিজস্ব আস্তানা থেকে পরিক্রমা
                   শুরু করেছি কবেই 
শুধু আত্মরক্ষা শুধু আত্মবোধ ক্রমশ বাড়ছে পদযাত্রা  
                         কন্ঠহুঙ্কার -
কোনো অবাস্তবতা নয় 
এই আমার নরম মাটির ঠিকানা এই আমার শক্ত  মাটির ঠিকানা 


চেয়ে দেখো 
উঠছে ভোরের সূর্যোদয়..





নতুন গন্ধ


হৈমন্তীর কুয়াশামুখ ঢেকেছে  তার নাভী
মধ‍্যাহ্ণে পরেছে সে হলুদ জামদানি 
পড়ন্ত সূর্যস্নাতা এখন সে 
সোনালি ভেলভেট জড়ানো তার সিন্দুক
উঠানে রেখেছে সে কেটে কেটে রাখা সোনা।


তবু হেমন্তিকা শিষ কুড়ানো ধান ভরে আঁচলে
নবান্ন আসলে তার মাটির ঘরের নাম...





মৃত্যুর  পরে


যেদিন দিগন্তের গন্ডী ছুঁয়ে
                            দাঁড়াবো 
সেদিন সঠিক গন্তব‍্যস্থলের     
         দরজা বুঝতে পারবো 
ঐ ঘরে কে থাকেন ?
কারা থাকেন ? 
আমি কী তাঁদের সাথে মিশে যেতে পারবো ?
সেখানে কী ফুল ফোটে ?
পাখি গায় ?
নাকি সমুদ্রের পাহাড়ের  গায়ে আছাড় খায় সমুদ্রেরই ঢেউ ? 


নাটিকা পতনের পর দেখবো গন্তব‍্যের দরজা খোলা -
আমি তখন 
ডিপফ্রিজের ভিতর               ভাসমান হীমশৈল হবো...





পাখি হুঁস 


উঠোনে বিছানো নবান্নের ধান
পাখি ওড়ে 
     পাখি দেখে 
            পাখি বসে। 
খুঁটেখুঁটে ধান খায়। প্রকৃতির পক্ষী! ছোট ঠোঁট বড় দেহ 
  বড় ঠোঁট ছোট শরীর 


সাধু তোমার  সাধন কোথায় ! 
এত সাজসজ্জায় 
তপস্বীর তপস‍্যা কী করে হয়! 


ফাঁদবৃত্তের পরিমাপ জানো না
ক্ষীণ পায়ের জন‍্য রেখেছ
                            দীঘল বৃত্ত।
পাখিদের প্রতিবিম্ব 
এবার উলম্বরেখা টানে - 
সারাদিন পাখি ডানা ঝাপটায় আহ্ণিক সারতে হবে তার
ঘরের সন্ধ‍্যাপ্রদীপ ডাকে
আসরবাতি ডাকে।
আকাশের নীল মেখে
পড়ন্তবেলায় দেখা গেল  
           পাখি হুঁস...





নিশিচান


চলো হাতের আঁজলায় নিয়ে আসি 
শ্লেট ভেজানো আকাশের জলকেলি
নিয়ে আসি ঝুম ঝুম সবুজের মখমলি
এসো মন গুঁজে পড়ে থাকি 
ঢ‍্যামসা মাদলে
জলে চুম্বন আঁকি
পাহাড়িয়া ঝাপটা বাদলে।
আমি তোমাকে  নিয়ে যেতে পারি
চাঁদগড়া জ‍্যোৎস্নায়  
দেখাতে পারি চিতার উঁকিমারা দৃশ‍্য চুপিচুপি হরিণের তৃষ্ণায় 
তুমি কি মত্ত হবে বেসামাল হাড়িয়ায় 
দুয়ারের চৌকাঠে রাখা
উন্মুক্ত সামিয়ানায়?
যত জাগরুক গান বেজে উঠুক 
আমি জোনাকরাতের স্নান
বোঝে না শূন‍্য বুকের  কুহুক 
হাহুতাশী! আমি ঝিঁঝিঁ পোকার তান।





স্বর্গ খুঁজি 


মেঘের ভিতর মেঘের পুঞ্জ
আকাশটাকে ঘিরে
পিনাক বুঝি দাঁড়িয়ে আছে মেঘের পাঁজর চিরে।
সেদিন ছিল জমাট রাগের 
তীব্র দহন রূপ
আজ সে আকাশ নীলাম্বরী
লাজুকবতী চুপ।
ক'দিন আগেই দেখছি আহা
অঙ্গভেজা লাজ
হলুদ লালের রাঙা চেলীর বারবধুঁয়ার সাজ।
আবার কখন ছাই ছড়িয়ে কালো
ছায়ায় ঢাকেন
বারীশ তখন মান ভাঙাতে বজ্রচমক আঁকেন।
ছয় ছয়টি ঘর পেড়িয়ে আকাশঋতুর বাড়ি
সূর্য চাঁদের রান্নাঘরে 
তারার মালার সারি।
অবাককরা রামধনুটার 
সাতটি রঙের দেয়াল
এসব নিয়েই আকাশ খেলে 'আপনমনের খেয়াল'।
বলতো আকাশ তোর ওপরেই স্বর্গ আছে বুঝি ?
শাদায় থাকিস যখন তুই 
সেটাই তখন খুঁজি।

Comments

Post a Comment