কবিতা - সঞ্জয় সোম


বিড়াল পুরাণ

 

বিড়ালকে দেখি আর ভাবি। ভাবনা শেষ হয় না। কেন
যেন মেলাতে পারি না। একবার ভাবি বিড়াল আমাদের
জননী। আবার ভাবি, আমাদের মন্ত্রী আমলারা আগের
জন্মে বিড়াল ছিলেন। কেন না আমাদের মন্ত্রী অমলারা নিজেদের নোঙরা চেহারা-মুখ লুকোতে কি
না করেন।
 

বাড়িতে এক বিড়াল-জননী চারটা বাচ্চা দিয়েছে।
প্রথমে বুঝতে পারিনি। ম্যাও ম্যাও শব্দে রহস্য জেনেছি।সারা দিন সদ্যজাত সন্তানের জন্য ঘুর ঘুর
করে।দুধদান করতে ঠিক চলে আসে। হিংস্র শ্বাপদের
আক্রমন থেকে প্রজন্মের রক্ষায় স্নেহশীলা জননী রাত পাহারা দেয়। পাশ দিয়ে গেলে আক্রমন করতে
আসে।নিজে দুয়েকবার আক্রনের মুখে পড়েছি।
তাড়াতাড়ি ফিরে এসেছি। বিড়াল-জননীকে মনে হয়
আমাদের পরমা প্রকৃতি।মনে পরে আমার প্রয়াতা
জননীর কথা।যার কথা সারাক্ষন মনে থাকে।
 

বিড়াল কোনও কালেই আমার পছন্দের পশু নয়।
যখন ধীরে ধীরে ঘরের ভেতর দিয়ে নি:শব্দে হাঁটে
তখন মনে হয়  অন্ধকাসুর আমাদের ভারত-জননীর
উপর কুদৃষ্টি দিয়েছে। পেছনে আছে কোনও বৃহৎ শক্তি।
এই বিড়াল নিজের বিষ্ঠা মূত্র হিংস্র নখ বার করে
মাটি চাপা দিয়ে রাখে। দেখি আর ভাবি। নিজের
নোঙড়া দুর্গন্ধময় চেহারা সরিয়ে রাখলো বিড়াল।
ঠিক যেন আমাদের মন্ত্রী আমলারা। নিজের নোঙড়া
মুখ মুছতে কত না কৌশল নেয়। তখন মনে হয়
মন্ত্রী আমলারা আগের জন্মে বিড়াল ছিল।
 

মা'য়ের কাছে শুনেছি সন্তানের নিরাপত্তার খাতিরে
বিড়াল-জননী ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করে।সন্তান
সুখের জন্য মা'য়ের মন।
 

বিড়াল পুরাণ লেখা অনেক বড় হয়ে গেল। ভাবলাম
আর কথায় সাজালাম। ভয়ে ভয়ে থাকি। নিজের ঘরে
নিজে। প্রতিক্ষায় দিন গুনছি কবে বিড়াল আমাদের
ঘর থেকে যাবে। কেন না দুধ ক্ষীর মাছ চোর বিড়ালকে
বেশী দিন বিশ্বাস করা যায় না।

Comments