রঙিলা দালানের মাটি - সুবীর সরকার

সমস্ত বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল জুড়ে নিয়মিত চলছে কবিতাচর্চা। কবিতা নিয়ে প্রবল স্বপ্ন দেখা। বাংলা কবিতা লেখা হচ্ছে প্রান্তে প্রান্তে। অন্তর্জাল এবং মুদ্রিত পত্রিকার মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে পাঠকের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যেও কিছু ভালো আর সৎ কবিতার মুখোমুখি দাড়াতে পারছি আমরা। কত প্রানবন্ত নুতন কলম নুতন কবিতা লিখছেন। পাঠক হিসেবে আমি সমৃদ্ধ হচ্ছি। আমাদের এই উত্তর জনপদ জুড়েও অনেক তরুণতম কবি খুব নিবিড়তা নিয়ে লিখে চলেছেন বাংলা কবিতা। 

তেমনই কিছু কবিকে নিয়েই এই লেখা লিখছেন 

কবি সুবীর সরকার আজ প্রথম কিস্তি।




সমস্ত বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল জুড়ে নিয়মিত চলছে কবিতাচর্চা। কবিতা নিয়ে প্রবল স্বপ্ন দেখা। বাংলা কবিতা লেখা হচ্ছে প্রান্তে প্রান্তে। অন্তর্জাল এবং মুদ্রিত পত্রিকার মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে পাঠকের কাছে। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যেও কিছু ভালো আর সৎ কবিতার মুখোমুখি দাড়াতে পারছি আমরা।

কত প্রানবন্ত নুতন কলম নুতন কবিতা লিখছেন।

পাঠক হিসেবে আমি সমৃদ্ধ হচ্ছি। আমাদের এই উত্তর জনপদ জুড়েও অনেক তরুণতম কবি খুব নিবিড়তা নিয়ে লিখে চলেছেন বাংলা কবিতা। তেমনই কিছু কবিকে নিয়েই এই লেখার সূচনা।

তরুণ কবি বঙ্কিম কুমার বর্মন। বসবাস: উত্তর দিনাজপুর জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেরা বিদিশৈল গ্রামে। বঙ্কিম গ্রামীণ পরিসরে বেড়ে উঠেছে। সে কৃষক পরিবারের মানুষ। মাটির ঘ্রাণ, বিচিত্র মানুষ আর অনাবিল প্রকৃতি তাকে ঘিরে রেখেছে অদ্যাবধি।

বাংলায় স্নাতক বঙ্কিম এখন বিএড পাঠরত। বঙ্কিম জন্মেছেন ১৯৯৯ সালে।

বঙ্কিমের কবিতার ভেতর এক তীব্র মেদুরতার কুহক। নিবিড় পাঠে পাঠককে আচ্ছন্ন হতেই হয়।



বঙ্কিম লেখে_

"এসো বিরহ, তোমাকে জড়াই আঁচল স্নেহে।
বুকের ভেতর শীতল পাটি বিছিয়ে দিই।
তুমি চুপ করে বসো। দুবেলা গরম ভাত দেব।
সাথে হাতপাখার হাওয়া"।
সাধারণ সব কথা।কিন্তু তীব্র এক মায়া!
বঙ্কিমের কবিতায় মাটির ছায়া। হাওয়া বাতাসের সুঘ্রাণ।
বঙ্কিম আবহ ছড়াতে থাকে এইভাবে_
"পেরিয়ে যাও মৃতের রেললাইন,
জলের তছনছ,বৃক্ষসুখ!"
আবার বঙ্কিম তার দেখাগুলিকে অদ্ভুত এক জায়মান বিস্তারের ঢাল দিয়ে গড়িয়েও দিতে জানে_
"ব্যর্থতার গায়ে জমানো যত শোকমালা
খুলে রাখি রৌদ্রের অট্টহাসিতে
তবুও এপথে সেপথে ছড়ায়নি বিষাদের ছায়া"
আসলে যে জীবনের ভেতর বারবার যাতায়াত করেন বঙ্কিম সেই জীবন বহন করতে করতে কবিতার তাঁত বুনে চলেন বঙ্কিম_
"একটু হলুদ নদী সেলাই করছে মুঠো ভর্তি উল্লাস
বুকে তার উড়ে উড়ে গান বাঁধে জলের ক্ষত"


সাধারণ শব্দ দিয়েই অসাধারণ নির্মাণ কৌশল বঙ্কিমের। তার শব্দের ভান্ডারে জমে আছে চিরায়ত এক ভান্ডার। গভীর এক জীবনের বোধ ইশারা রেখে যায় বঙ্কিমের কবিতায়_

"পাঁজরভর্তি  যন্ত্রণার আয়ু আমাকে আগুনের কথা বলে। আমি তাকে ছেড়ে এসেছি শ্মশানের পথে।"


এটুকুই বলবো, যদি নিজেকে আরও আরও মগ্নতায় নিমজ্জিত করতে পারে,যদি নিজেকে গনগনে কবিতার তাপ ও ক্ষুধার দিকে নিয়ে যেতে পারে তাহলে আগামীতে বাংলা কবিতায় একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ হয়ে উঠতে পারে বঙ্কিম কুমার বর্মণ।


তার কবিতার পরতে পরতে সেই চিহ্ন আর সম্ভাবনা আমি কিন্তু বেশ দেখতে পারছি।

Comments

  1. বাঃ, চমৎকার কবিতাশৈলী। সংক্ষিপ্ত হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এমন একটি উদ্যোগের জন্য পত্রিকা ও কবি আলোচক সুবীর সরকার কে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।
    আগামী প্রজন্মের বাংলা কবিতা তরুণ কবির হাতে আরও বিকশিত হোক।

    ReplyDelete
  2. খুব ভালো প্রয়াস l তবে দুজন বা তিনজন কবি নিয়ে আলোচনা হোক l

    ReplyDelete
  3. খুব সুন্দর আলোচনা

    ReplyDelete

Post a Comment