অণুগল্প - সহেলী দে ঘোষ



মুখোশ 


অরুন্ধতীর কিছুতেই হিসাব মিলছে না। কেন কেন দিন দিন মেঘার জেদ বেড়েই চলেছে। মেঘা একমাত্র মেয়ে।  মেয়ের সব আবদার মেটানোর চেষ্টা করে অরুন্ধতী ও বিমান। দুজনেই যেহেতু তারা বাইরে থাকে সারাদিন তাই মেঘাকে দেখাশোনার জন্য একজন মহিলা রয়েছে। মালাদির স্বভাব খুব ভালো। ভীষণ যত্ন করে মেঘার। ওর চকাছে মেয়ে রেখে অরুন্ধতী নিশ্চিন্ত। ইদানীং মেঘার বদমেজাজ তার মাকে ভাবাচ্ছে। কেউ আবার কোন ক্ষতি করছে না তো মেয়েটার।  আজকাল তো দিনকাল ভাল নয়। কোনো  নির্যাতনের  শিকার হচ্ছে না তো মেয়েটা। যেভাবেই হোক সত্যিটা জানতেই হবে। আজ অরুন্ধতী স্কুল ছুটি নিয়েছে। মেঘার ছুটির সময়ে সে নিজেই বাসস্টপে গেল। গিয়ে দেখল বাসের ড্রাইভার মেঘাকে কোলে নিয়ে বসে আছে আর মেঘা কাঁদছে।রাগে অন্ধ হয়ে অরুন্ধতী ড্রাইভারকে চড় মারে। ভাবে কালই স্কুলে গিয়ে প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলবে। বদমাইশ লোকটাকে  কোনোভাবেই ছাড়বে না শাস্তি দেবে। বাড়ি ফিরে দেখে মালাদি চলে যাচ্ছে। তার নাকি কোনো তাড়া আছে। অরুন্ধতী র কাছে  খাওয়ার সময় চেঁচিয়ে ওঠে মেঘা। কিছুতেই খাবে না। তার মা ড্রাইভার আংকেলকে মেরে ভুল করেছে। মেঘা বাস থেকে নামার সময় পড়ে গিয়ে ব‍্যাথা পেয়েছে  তাই ড্রাইভার আঙ্কেল ওকে কোলে নিয়েছিল। মালা আন্টি তো  রোজ যখন  মেঘাকে জোর করে আদর করে, চুমু খায়, তখন মেঘার ভীষণ ব্যথা হয়। আবার ভয় দেখায় মাকে কিছু বললে মেঘা কে মারবে। মা তো তাঁকে কিছু বলে না অরুন্ধতী মেয়েকে বুকে চেপে ধরে বসে থাকে। ভাবে বিমান এলে আগে থানায় যাবে। তার তারপর নতুন আয়ার খোঁজ করবে। আর কাল একবার মেঘার ড্রাইভার আঙ্কেলের সাথে দেখা করবে......

Comments