কবিতা - রুমি নাহা মজুমদার


ওঙ্কার 

 

দিন শেষে না ফেরার দলে ছিলাম আমি 
দুচোখ বেয়ে নেমে আসা  অন্ধকারে 
হাতরে মরেছি-- কি পেয়েছি কি পায়নি বলে
তবু বন্ধ ঘরের জানালায় উঁকি দিয়ে
এক আকাশ আশা রোদ্দুর খাতা খুলে
দিনলিপি লেখে ।পাখির কলতান 
ভরিয়ে দেয় পাতার পর পাতা
আগামীর আশ্বাসে বুক ভরে ওঠে 
গাছেদের ।আমি ওদের ঘরে ফিরে যাই 
কে আছে বলো আর কেউ তো নেই কোন খানে 
শুধু বন্ধ খাঁচা ----!
দম বন্ধ হয়ে আসে গাছেরাও বন্ধু হয় 
ওরা বোঝে আমায়, আমি ওদের
পাখিরা অতিথি হয়ে ফেরে 
ওদের নানা রঙের খুনসুটি ফিরিয়ে আনে 
মনের রং পরম সোহাগে চলাচল দেখি।
মনের ভেতর জমে থাকা অঙ্গার  কুড়িয়ে নিয়ে বাগানের আম পাতা বেলপাতা 
কানে কানে বলে --"এই তোমাকে দিলুম ওঁ মন্ত্র 
চোখ বোজো।  একশ আট মন্ত্রে ভরো মঙ্গলঘট 
যে গোখরো বিষে তোমার জিভ নীল হয়ে গেছে 
মন্ত্র বলে  চিরে দাও তার জিভ
বাঁচো নিজের জন্য নিজে
উঠে দাঁড়াওসমুদ্রকে শোনাও শাম গান 
পুকুর পুজো করবে বলে তো আসনি !
যে বিস্তীর্ণ নুড়ি   বালি পড়ে আছে 
প্রলম্বিত রাতের অগোচরে তাতে ফুল বিছাও
তো তোমারি কাজ ! আমরা তোমার বাগানের টগর রঙ্গন -জবা- মালতীলতা- সবাই সাজি ভরে দাঁড়িয়ে আমি আম গাছকে জড়িয়ে ধরি 
শুনতে পাই ওঙ্কার ধ্বনি
বেল গাছের পায়ের কাছে যাই
সেও বলে একই কথা 
এরপর জাম-কাঁঠাল- দারুচিনি- সুপারি -বট -পাকুড় যজ্ঞ ডুমুর সবার কাছে কাছে ফিরি 
সোনালি রোদের ওঁ-কারে 
কানে কানে ফিরে 
মাতৃ শক্তি মন্ত্র।
 

 



Comments