দুটি কবিতা - মহুয়া


চলো পাল্টাই


আমার শহর ভৈরবীর মসৃণ চাদর ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে দোয়েল বুলবুলের সর বিস্তারে। কংক্রিটের ব্যস্ততা একটু একটু করে গিলে খাচ্ছে অনেক কিছু। আজ থেকে কিছু আগেও আজান আর কীর্তন একসাথে হাঁটতো এই শহরের গলি থেকে রাজপথ। ঈদে বিরিয়ানি ক্রিসমাস কেক পুজোয় খিচুড়ি এই ছিল আমাদের আনন্দ। উৎসব মানেই আনন্দ। ট্রানজিস্টার এর গা থেকে দরাজ গলা বেরিয়ে আসতো।

আমার শহর বেহাগ বা ইমন সাজ বাতি প্রতি ঘরে। সুর করে নামতা পড়া আর ভাত ফুলের গন্ধ উঠে আসত এক মায়াময় সন্ধ্যা। খিদে তখন হারিকেনের আলোয় দপ দপ করতো।

হাতের চৌকো বাক্সে বন্দী সব। আমরা কেমন পাল্টে গেলাম।

 

 

ভয়

ভেতর একটা ভয় বাসা বেধেছে গভীর তার শেকড়। খুব চেষ্টা করছি উপড়ে ফেলার শক্তি পৌঁছয় না। একটু রাত বাড়লে গা ছমছম করে বাড়ি পৌঁছাব তো।বাসে ট্রেনে অটোতে বিয়ে বাড়িতে হাটে-বাজারে একটা ভয় গিলে খাচ্ছে। শরীর মুরে রাখা লজ্জা বস্ত্রে মোমবাতির মিছিল দেখতে দেখতে গুটিয়ে নিচ্ছি শামুকের মতো। তুমি তোমরা দেখতে পাও না কালো কাজল লাল লিপস্টিকের তলায় কিভাবে সেকর ছড়াচ্ছে ভয়। দিনে-রাতে আলোতে অন্ধকারে আমাকে আঁকড়ে ধরে।

মাঝে মাঝে মনে হয় এই অহংকারী হাত যদি নিমিষে অন্ধকার করে দেয় পৃথিবীটা কোথায় লুকাবো।আমি তো আর মানুষ নেই পড়শী ভয়  খবরের কাগজের স্তরে স্তরে হাত-পা ছড়িয়ে শুয়ে আছে

আপনাকে বলছি সর্বোচ্চ আসনে বসে আছেন। এই ভয়ংকর রোগ থেকে মুক্তি চাই একটা স্বচ্ছ স্বাধীন  নির্ভীক ভূগোল চাই।




Comments