মঞ্জুশ্রী রায়ের অপ্রকাশিত
দুটি কবিতা
(১)
চার্বাকের কান্না
কখনো সূর্যোদয়ের মুহূর্তে হঠাৎ
চার্বাকের কান্না শুনি আমি!
এক একটি অন্ধকার পলেস্তারা খসে গেলে
আচম্বিতে ভেসে আসে দীর্ঘশ্বাস
হাজার বছরের ওপার থেকে!
বহুদূর নাকি বুকের ভেতর?
নিমগ্ন কান পেতে শুনি
চার্বাকের বাণী -
'ভুল বলেছি আমি,
শোনো অমৃতের পুত্রগণ.... '
অমৃতের পুত্র আমি, সোহহম্
জ্বলে উঠি এক কণা আলো!
আলো! আলো!
এ কী আলো!
একি আলো? নাকি আলেয়ার মায়া?
দপ করে নিভে গেলে জোনাকির কায়া।
বিপন্ন চার্বাক কাঁদে শুনি,
'শোনো, শোনো,
শোনো অমৃতের পুত্রগণ....'
অমৃতের পুত্র আমি! এই অহম্
হেসে উঠি সূর্যাস্তের শেষে,
'বুড়োটা পাগল, প্রলাপ বকে।'
(২)
প্রেমিক বাউল
শূন্য জলসাঘর,
রঙ্গীন পানিয়ের বুকে গজলের কান্না।
স্মৃতির খনি থেকে ভেসে আসে
নূপুরের রিনিঝিনি, তবলার তাক্ ধিন
ধুলো মাখা ঝাড়বাতির নিরেট অন্ধকার।
পেয়ালা হাতে বিষন্ন প্রেমিক।
সায়াহ্নের সন্ধিক্ষন,
আঁচল গলে গৃহবধূ, তুলসি তলায় উলুধ্বনি।
দূর সুদূর থেকে ভেসে আসে, মিলেমিশে
শঙ্খনাদ, কাসর ঘন্টা, আজানের গান।
লক্ষ জোনাকী প্রদীপে, বনে, গগনে।
একতারা হাতে উদাসী বাউল।
গজল না বাউল? সুরা না সুধা?
শেষ না শুরু? শূন্য না পূর্ণ?
মেলেনা উত্তর, মেলেনা তফাৎ।
নিরাকার ব্যোম শূন্য পাত্রে পরিপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখায়
পূর্ব পশ্চিম মিলেমিশে একাকার।
এক পা শূন্যে, এক পা পূর্ণে
কোন পা তোলে প্রেমিক বাউল?
Comments
Post a Comment