গল্প - সুস্মিতা নাথ


নীলগ্রহের মানুষ

চেম্বার এখন প্রায় ফাঁকা। দুপুর থেকেই টুপুর টাপুর বৃষ্টি পড়ছে। রাস্তাঘাটে তাই লোকজন খুব কম। আশপাশের দোকানগুলোতেও খরিদ্দার তেমন দেখা যাচ্ছে না। একা একা বসে থেকে থেকে একটু তন্দ্রামতো এসে গিয়েছিল ডাক্তার বিষ্ণুপদ চোঙদারের। হঠাৎ একটা মিহি শব্দে সম্বিৎ ফিরল তাঁর।

   	"ডাক্তাবাবু আসতে পারি?"

   	যাক, এতক্ষণ পরে অন্তত একজন রোগীর দেখা পাওয়া গেল। খুশিতে নড়েচড়ে বসলেন ডাক্তার বিষ্ণুপদ। তারপর গম্ভীর স্বরে বললেন, "আসুন"। 

   	প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দরজার পর্দ্দা সরিয়ে ভেতরে ঢুকল একজন বেটেখাটো মানুষ। উচ্চতায় বড়জোড় সাড়ে চার ফুট। রোগা লিকলিকে চেহারা। দেখতেও যেন বেশ অদ্ভুত। খরগোশের মতো ছোট্ট ছোট্ট দুটো গোল গোল চোখ। টিকালো নাক। আর কানদুটো মুখের তুলনায় বেক্ষাপ্পা ধরনের বড়।  লোকটার মাথায় একটুও চুল নেই। এমনকী ভুরুও দেখা যাচ্ছে না। একটা রুমাল নিয়ে ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতটা চেপে ধরে আছে লোকটা। বিষ্ণুপদ বুঝলেন, হাতেই কোনও সমস্যা হয়েছে লোকটার। ইশারায় সামনের চেয়ারে লোকটাকে বসতে বললেন তিনি। 

    	জড়সড় ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে লোকটা বলল, “ভয়ানক সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে আসতে বাধ্য হলাম ডাক্তারবাবু।” 

    	“সে তো ঠিকই, সমস্যায় পড়লেই না লোকে ডাক্তারের কাছে আসে। তা বলুন সমস্যাটা কী?” বিষ্ণুপদ স্মিত হেসে বললেন।

    	“সত্যি বলতে কী ডাক্তারবাবু, এতদিন নিজের অসুখ-বিসুখের চিকিৎসা নিজেই করেছি। কিন্তু এখন নিতান্ত নিরুপায় হয়েই...। হাতে এমন ভাবে চোট পেলাম যে, রক্ত ঝরা কিছুতেই কমছে না। ...ডাক্তারবাবু দয়া করে কৃপা করুন আমায়।” লোকটা ছলছল চোখে বলে। 

    	“আরে আরে, কৃপার কথা উঠছে কেন? এতো আমার কাজই।” বিষ্ণুপদ তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন। “তা কী করে চোট পেলেন আপনি?” 

    	“আর বলবেন না  ডাক্তারবাবু। ইস্কুলের দোতলার ছাদের ওপর থেকে ঝাপিয়ে হাইজাম্প প্র্যাকটিস করছিলাম। তখনই আছাড় খেয়ে এই কাণ্ড।”

    	লোকটার কথা শুনে বিষ্ণু ডাক্তারের ভিমড়ি খাবার জোগাড়। বলে ওঠেন, “কী বললেন? দোতলার ছাদের থেকে হাইজাম্প প্র্যাকটিস!”  তিনি যারপর নাই বিস্মিত। বলে কী লোকটা! পাগল টাগল নয়ত? মনে মনে ভাবলেন বিষ্ণুপদ। 

      	লোকটা যেন ডাক্তারের মনের কথা বুঝেই আবার বলে উঠল, “হ্যাঁ ডাক্তারবাবু, হাইজাম্প মানে লম্ফ দেওয়াই প্র্যাক্টিস করছিলাম। আগে কত এমন লাফিয়েছি। ঠিক কাঙ্গারুর মতো মস্ত মস্ত জাম্প দিয়ে এক জায়গার থেকে অন্য জায়গায় চলে গেছি। লাফাতে আমার খুব ভালো লাগে। কিন্তু এখানে আসার পর থেকে সেটা বন্ধ হয়ে গেল। অনেকদিন অনভ্যাসে যা হয়, অ্যাদ্দিন পর যখন আবার যখন একটু লাফাতে গেলাম, তখন পড়েই গেলাম। আসলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের হিসেবটাও আমার গণ্ডগোল হয়ে গেছিল। 

       বিষ্ণুপদ ডাক্তারের দুই চোখ ছানাবড়া। কী সব আবোল তাবোল বকছে রে লোকটা! এ যে নির্ঘাত পাগল এতে আর সন্দেহই নেই। সারা সন্ধে বসে থেকে যাওবা একজন রোগী পাওয়া গেল, তো সেও পাগল! আজ দিনটাই মাটি। মনে মনে খুব বিরক্ত হলেন বিষ্ণু ডাক্তার। অবশ্য মুখের প্রসন্ন ভাব অবিকল ফুটিয়ে রেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “তা কোথায় থাকা হয়?”

    	“আজ্ঞে ট্যাংরায়।” সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিল লোকটা। “একটা ছোট্ট ঘর বানিয়ে আছি ডাক্তারবাবু। বড় কষ্টে আছি। বললে হয়ত বিশ্বাস করবেন না ডাক্তারবাবু, টাইটানে আমাকে এক ডাকে সব্বাই চিনত। রাজা-মন্ত্রী-আমলারা সব্বাই আমাকে কুর্নিশ করে চলত। সেই আমি আজ এখানে এভাবে থাকছি।”
 
     	বলেই লোকটা লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কাঁদো কাঁদো মুখে তাকাল বিষ্ণু ডাক্তারের দিকে। লোকটার দুঃখী দুঃখী মুখ দেখে বিষ্ণু ডাক্তারের দুঃখ তো হলই না, উল্টে বেজায় হাসি পেল। এ যে-সে পাগল নয়, বদ্ধ উন্মাদ যাকে বলে। কোনরকমে হাসি চেপে ডাক্তার বললেন, “আগে যেন কোথায় থাকতেন বললেন?” 

     	“আজ্ঞে টাইটানে। শনিগ্রহের উপগ্রহ টাইটানে। তবে আপনারা ওটাকে টাইটান বললেও, আমরা কিন্তু ওটাকে বলি নীলোরেক্স আলফা থ্রী।” 

     	“টাইটানে! উড়িব্বাস! সে তো বহু দূরের কথা। মাইল বা কিলোমিটার নয়,  একেবারে আলোক বর্ষের হিসেব!”  বিষ্ণু ডাক্তারের ভুরু কপালে উঠে গেছে। লোকে বলে গল্পের গোরু গাছে চড়ে, আর এখানে তো পাগলামির গোরু গ্রহান্তরেও পারি দিয়েছে! এখন বেশ মজাই লাগতে শুরু করেছে ডাক্তারের। পাগল হলেও লোকটার কল্পনাশক্তি দারুণ। একে মোটেও বিপজ্জনক মনে হচ্ছে না।
 
	লোকটা বলে চলে, “হ্যাঁ ডাক্তারবাবু, আমাদের দেশটা বড় সুন্দর। আর ঐযে মাধ্যাকর্ষণের কথা বললাম, সেটা ওখানে আপনাদের চাঁদের থেকেও কম। সেজন্যেই ওখানে সবাই অনেক উঁচু পর্যন্ত লাফাতে পারে। উঁচু উঁচু বাড়িতে আমাদের কখনও সিঁড়ির দরকার পড়ে না। আমরা লাফিয়েই উঠে যাই…।” 

    	লোকটার কথা যত শুনছে, ততই চোখ দুটো বিস্ফোরিত হচ্ছে বিষ্ণু ডাক্তারের। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েই চলেছে। সন্ধেও নেমে গেছে। আর কোনও রোগীরও দেখা নেই। অথচ ভিজিটিং আওয়ার যখন রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত, অতটা  সময় ডাক্তারকে চেম্বারে বসেই থাকতে হবে। বলাতো যায় না কখন কোন রোগী এসে পড়ে। তাই বিষ্ণু ডাক্তার ভাবলেন, একা থাকার এই সময়টা বরং পাগলটার সঙ্গে খোস গপ্পো করেই কেটে যাক। 

    	লোকটাকে তাই আবার উস্কে দিতেই বিষ্ণু ডাক্তার বললেন, “তা এখানে মানে পৃথিবীতে কীকরে আসা হল?” 
    	“আজ্ঞে, সে আমার পোড়া কপাল ডাক্তারবাবু। সুখেই ছিলাম নিজের দেশে। ধন-মান-জন কোনকিছুরই অভাব ছিল না মোটে। কিন্তু গ্রহের ফের যাকে বলে, হঠাৎ ইচ্ছে হল ব্রহ্মাণ্ড ঘুরে দেখব। যেমন ইচ্ছে তেমন কাজ। একদিন মহাকাশযানে চেপে বেরিয়ে পড়লাম মহাশূন্যে। বৃহস্পতি, মঙ্গল, ইউরেনাস ঘুরে সবশেষে এলাম পৃথিবীতে। এখানে এসেই বিপত্তি ঘটল। বঙ্গোপোসাগরের ওপর দিয়ে চলছিলাম আমরা, হঠাৎ প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে পড়লাম। সেই সঙ্গে সে কি বজ্রপাত! আমাদের পুরো যানটাই টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ল সাগরে। কেবল আমি প্রাণে বেঁচে গেলাম। তারপর এদিক ওদিক ঘুরে ট্যাংরায় আশ্রয় হল।”  

      	বিষ্ণু ডাক্তার মনে মনে বেজায় পুলকিত হচ্ছেন। মানতে হবে, লোকটার কল্পনাশক্তি সাংঘাতিক।  মুখে বেশ একটা সমবেদনার ভাব ফুটিয়ে ডাক্তার বললেন, “আহারে! তখন থেকেই বুঝি ট্যাংরায়? ইশ! কোথায় টাইটান, আর কোথায় ট্যাংরা! সত্যি দুঃখের। আপনার কষ্ট আমি বুঝতে পারছি মশাই।” 

     	ডাক্তারের কথা শুনে লোকটার মুখ আরও করুণ হয়ে উঠল। ছলছল করে উঠল চোখ দু'টো। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপ করে বসে রইল।

     	বিষ্ণু ডাক্তার রসিকতার সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইলেন না। বললেন, “তা খামোখা লাফাতে গেলেন কেন? টাইটানে যেতে চাইছিলেন বুঝি?"  

    	ডাক্তারের রসিকতা ধরতে না-পেরে লোকটা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল, “না-না ডাক্তারবাবু। টাইটানে কী আর এ জন্মে ফেরা হবে আমার? (আবার একটা দীর্ঘশ্বাস)। আসলে আগে তো লাফিয়ে লাফিয়েই যাতায়াত করতাম সবসময়। কিন্তু এখানে আসার পর থেকে দেখলাম এখানে মানুষেরা তেমন লাফাতে পারে না। লাফায়ও না। কেউ লাফালেও হাসে। ফলে মানুষের সঙ্গে মিশে থাকার জন্যে আমাকেও লাফানো বন্ধ রাখতে হল। না লাফিয়ে লাফিয়ে শরীরটাও ভারীহয়ে গেল। কিন্তু কাল হল কী, রাতে গরমে ঘুম আসছিল না। ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি চাদ্দিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। এলাকাটা নিঝুম হয়ে আছে। কেউ কোত্থাও নেই। ঠিক তখনই সাধ হল লাফানোর। আমি ইস্কুলের বিল্ডিঙের ওপড়ে চড়ে ছাদ থেকে দিলাম লাফ। আর তারপরেই যা ঘটার ঘটল। পাথরে বাড়ি খেয়ে হাতটা একেবারে থেতলে গেল।” 

    	“দেখি দেখি হাতের কী অবস্থা?” অবশেষে খাজুড়ো আলাপ ছেড়ে বিষ্ণুপদ লোকটার জখম হাতখানা দেখতে চাইলেন। 

   	লোকটা রুমাল সরিয়ে বাঁ হাতখানা এগিয়ে দিল ওঁর দিকে। হাতের দিকে তাকাতেই চমকে উঠলেন বিষ্ণুপদ। সারা হাত যেন নীল রঙের তরলে  মাখামাখি। "এ কী! নীল নীল এসব কী দিয়েছেন হাতে?" চেঁচিয়ে ওঠেন তিনি।

   	“আজ্ঞে কিছু দেইনি ডাক্তারবাবু, ওটা আমার রক্ত।” লোকটা বিগলিত হয়ে বলে। 
   	“রক্ত? রক্ত আবার নীল হয় নাকি?” ধমকে ওঠেন বিষ্ণুপদ। তাঁর বিস্ময়ের শেষ নেই। কী যে পাগলের পাল্লায় পড়লেন! এতদিন ধরে এত রোগী দেখেছেন তিনি, সাপে কাটা কত রোগীও পেয়েছেন, কিন্তু রক্তের রঙ নীল কস্মিনকালেও দেখেননি। কোনও অসুখেও রক্তের রঙ এমন পাল্টে যায় বলে শোনেননি তিনি।  আর শুনবেন কী করে? রক্ত যে লাল হয়, সেটাই তো বিশ্বসুদ্ধ লোক জানে। শুধু মানুষেরই নয়, পশু পাখির রক্তও লাল হয়। তবে শুনেছিলেন যে অক্টোপাসের রক্ত নীল হয়, কিন্তু এ রোগী তো আর অক্টপাস নয়! অথচ লোকটি বলে  কিনা...

  	 বিষ্ণুপদ আরও ঝুঁকে ক্ষতটা দেখে বোঝার চেষ্টা করেন, নীল রঙের তরলটা ঠিক কী জিনিস। লোকটা এই দেখে হেসে ফেলল। বলল, “আমি ব্লু-ব্লাডেড ডাক্তারবাবু। তবে আপনারা মানুষেরা ব্লু ব্লাডেড বলতে যা বোঝেন তেমনটা নয়। মানে রাজা রাজরার রক্ত নয়। টাইটানে সকলের শরীরের রক্তই নীল।” 

   	বিষ্ণুপদ নিজের চোখ, কান, কোনওটিকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। এও সম্ভব? লোকটা যা বলছে সব সত্যি হতে পারে? এতক্ষণ তিনি লোকটাকে পাগল ভাবছিলেন, এখন মনে হচ্ছে নিজেই পাগল হয়ে যাবেন। এই ভোর সন্ধেবেলা, এমন নিঝুম বৃষ্টিভেজা পরিবেশে কী বিপদেই না পড়লেন!  

   	লোকটার ক্ষতটা ক্রমশ ভিজে উঠছে নীল রক্তে। মুখে করুণ আর্তি ফুটিয়ে সে বলল, “প্লিজ ডাক্তারবাবু, আমাকে সাহায্য করুন। জানি আপনি অবাক হচ্ছেন, কিন্তু এটাই সত্যি। আমাদের রক্তের কেবল রংটাই আলাদা, বাকি সবকিছু এক। আপনি নিশ্চিন্তে চিকিৎসা করতে পারেন।” 

    	বিষ্ণুপদ ডাক্তার মানুষ। ভূত-টুতে মোটেই বিশ্বাস করেন না। অথচ এমন রোগী পেয়ে ভূত দেখার চেয়েও বেশি ঘাবড়ে গেছেন। মনে গুড়গুড়ে একটা ভয়ও উদ্রেক হচ্ছে। একবার ভাবলেন ছুটে পালিয়ে যাবেন। আবার ভাবলেন চিৎকার করে লোক জড়ো করবেন। কিন্তু লোকটার অসহায় করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে কোনটাই পারলেন না।   

এদিকে ক্ষতর যে অবস্থা তাতে সত্বর অ্যাটিসেপ্টিক না দিলে চলবে না। টিটেনাস ইঞ্জেকশনও একটা দেওয়া দরকার। দেরি হলে অবস্থা বাড়াবাড়ি হতে পারে। বিষ্ণুপদ যন্ত্রচালিতের মত চিকিৎসায় মন দিলেন।
এরপর আর কিছু মনে করতে পারছেন না ডাক্তার বিষ্ণুপদ। কখন যে নিজের চেয়ারেই ঘুমিয়ে পড়েছেন, খেয়ালই করেননি। হঠাৎ বাইরে একটা বাজ পড়ার শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল। হুটোপুটি করে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন তিনি। বেশ রাত হয়ে গেছে। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখেন তখনও তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যেই বাড়ি রওনা হতে হবে। আরামের আড়মোড়া ভেঙে বর্ষাতিটা গায়ে চাপালেন তিনি। মনে একটা স্বস্তির ভাব হচ্ছে। যাক ব্যাপারটা তাহলে স্বপ্ন ছিল। নইলে ভিন গ্রহের মানুষ, নীল রক্ত ...এসব কখনও সত্যি হয়? একা একা আপন মনেই হাসলেন তিনি। সারাদিন রোগী নিয়ে থাকেন বলেই হয়ত এমন অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছেন। তাছাড়া কখন কোন স্বপ্ন নির্ভেজাল বাস্তব হয়?

      চেম্বারের আলো নিভিয়ে বাইরে বেরোতে যাবেন, অমনি চমকে ওঠেন। অন্ধকারে টেবিলের ওপরে চকচক করছে নীল রঙের আলো! সঙ্গে সঙ্গে আবার আলো জ্বাললেন তিনি। দ্রুত টেবিলের সামনে হাজির হলেন। কলমদানির পাশেই রয়েছে জিনিসটা। মার্বেলের আকারের একটা ছোট্ট নীল রঙা পাথর। সেটার থেকেই টিকরে বেরোচ্ছে আলো। পাথরের নীচে  ছোট্ট একটা চিরকূটও রয়েছে। বিষ্ণুপদ কাঁপা কাঁপা হাতে সেটা তুলে নিয়ে দেখেন, কয়েকটা মাত্র কথা লেখা, -"ডাক্তারবাবু বড় উপকার করেছেন আমার। কিন্তু ভিনগ্রহী হওয়ার জন্যে আপনার সম্মান দক্ষিণা দেওয়ার মতো কোনও অর্থই আমার কাছে নেই। অগত্যা এই নীলকান্ত মণিটা রেখে গেলাম। এটা খোদ নীলগ্রহ বা শনিগ্রহের থেকে সংগ্রহ করা নীলকান্তমণি। আশাকরি এ কখনও আপনার কাজে লাগবে।"

    	গল্প এখানেই শেষ। তবে শেষেরও অনেক সময় শেষ থাকে না। অনেক কিছুই বাকি থেকে যায়। যেমন থেকে গেছে নীলকান্তমণিটা। বিষ্ণু ডাক্তারের ডানহাতের মধ্যমার আংটিটিতে যে নীলাটি দেখা যায়, সেটা সেই নীলকান্তমণি। অবশ্য নীলার রহস্য ডাক্তার কাউকে বলেননি। এমনকী গিন্নিকেও না। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলেন, শনির সাড়েসাতি চলছে কিনা, তাই জ্যোতিষী পরতে বলেছে।  

Comments

  1. এক নিঃশ্বাসে পড়লাম। দুর্দান্ত। সায়েন্স ফিকশনের গল্প।

    ReplyDelete
  2. দারুন۔۔ লাগলো

    ReplyDelete

Post a Comment