গুচ্ছ কবিতা - মাসুদুল হক



 শহর অন্যান্য কবিতা 

 

দর্জি পোশাক পুরাণ

 

 

খুব আনন্দিত হবার কিছু নেই 

 

 

গোপন ফল ভেবে যাকে ভোগ করছি;

দুজন মুহূর্তের জন্য স্বর্গ ঘুরে আসি 

 

 

আসলে তা শুধু বিভ্রম

 

 

আমি এক দর্জি

তুমি এক টুকরো নতুন কাপড়

 

 

রক্ত দিয়ে তোমাকে সেলাই করে 

আমাদের সন্তানের কাছে 

আয়ু আর ফলের রহস্য রেখে যাচ্ছি

 

 

পোশাক আমাদের আদিম কলার 

রূপ-সাংকেতিক চিহ্ন বয়ে নিয়ে যাচ্ছে

 

 

 
সম্পর্ক 

 

 

সম্পর্ক আসলে করুণার মধ্য টিকে থাকে 

যাকে আমরা বলি সহানুভূতি 

আরো গভীরে গেলে প্রেম

 

 

আমার কিছু অসুস্থতা আছে 

যাকে উৎরে গেলে

তোমাকে আর খুঁজে পাই না

 

 

তুমি যেসব ভুল করতে 

সেসব সুধরে নিলে 

আমার আর তোমার প্রতি আবেগ থাকে না 

 

 

দুজনে সমান হয়ে উঠি দুই মহীরুহ 

তবুও কোথায় যেন কেউ একটু ছোট

 

 

 

ভাগ্য 

 

 

আমার সঙ্গে আমার হৃদয় থাকে।  

বালিশের পিঠে চুপচাপ বুক ঠেকিয়ে

আমি হৃদয়ের কথা শুনি

হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে  চাঁদের বয়স গুনি। 

 

 

কেউ এসে আমাকে  বুঝতে চাইলে 

অবলীলায় কররেখা মেলে ধরি 

 

 

আর ভাগ্যের কথা বললে   

কপালের বলিরেখায় হাত বুলিয়ে নিই

 

 

কররেখা আর বলিরেখা বাইরে 

আমার কোনো ভাগ্য নেই

 

 

 

শহর 

 

 

শহরটা ক্রমশ জটিল হয়ে যাচ্ছে 

ভীড়ের মধ্যে শিখে যাচ্ছে সাইকেল চালানো 

 

 

কোনো কোনোদিন 

রাঙা ধূলির পথে সূর্য উঠে এলে

ফুটে ওঠে অজস্র মুকুল,না-ফোঁটা কুঁড়ি 

ঘুম আর বিষাদ নিয়ে শহর জেগে ওঠে 

 

 

প্রতিমুহূর্তে চিহ্নবিজ্ঞানের

নিকটবর্তী হয় বিষন্ন শহর

মুগ্ধ বা বিভ্রান্ত মুখে 

সরলতা বলে আর কিছু থাকে না

 

 

 

এই তুমি ঠিক তুমি

 

 

এই তুমি ঠিক তুমি

যতোটা তোমাকে চিনি

 

 

তোমার মুখ সবাই যেমন করে 

বিজ্ঞাপন খোঁজে মুখে 

তেমন করে সাজিয়ে রেখেছ মাত্র 

 

 

এই তুমি ঠিক তুমি

ভেতরে যন্ত্রণার নদী;বাইরে

আনন্দের ঝর্ণায় ভিজে যাচ্ছ তুমি

 

 

বাইরে আলোতে মুখর তোমার ধ্বনি

ভেতরে এক নিঃসঙ্গ অন্ধকারে 

ক্রমশ নিশ্চুপ হয়ে যাচ্ছ তুমি!

 

 

এই তুমি ঠিক তুমি

যতোটা তোমাকে চিনি

Comments

  1. স্যারের অনন্য সৃষ্টি -

    ReplyDelete

Post a Comment