বই কথা - দেবশ্রী রায়

 

'পঞ্চাশে ৫০'

মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য 

প্রথম প্রকাশ : অক্টোবর ২০২০

প্রচ্ছদ : মৃণাল শীল

প্রকাশনা : প্রদোষ রঞ্জন সাহা 

মূল্য : ২৫০ টাকা 



কোনও একটি বই পড়ে তার পাঠ প্রতিক্রিয়া দেওয়া বা পাঠ পর্যালোচনা করার অর্থ সেই বইয়ের নামকরণ থেকে শুরু করে বইয়ের উপজীব্য, রচনারীতি, শব্দচয়ণ, বিষয়ের সঙ্গে সমসাময়িকতার অন্বয়  ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। সুতরাং বুক রিভিউ দিতে গেলে দরকার নিবিড়  পঠন এবং তার সঙ্গে যোগ্যতা। তার ওপর সেটা যদি পঞ্চাশটি গল্পের সমন্বয়ে কোনও গল্পসংকলন হয়, তাহলে তার জন্য দরকার এক দীর্ঘ আলোচনা। তবুও একজন সৎ পাঠক হিসেবে যে বই পড়ে আনন্দ লাভ করি, সেই আনন্দটুকু ভাগ করে নেওয়া, সেই শিল্পকর্মটি সম্পর্কে কথা বলা বা মতামত দেওয়া একজন পাঠকের দায়িত্ব বলে মনে করি। কারণ তাতে লেখকের লেখনীর গুরুত্ব বাড়ে। আর সেই দায়িত্ব বোধ থেকেই গল্পকার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের গল্পগ্রন্থ 'পঞ্চাশে ৫০' বইটি সম্পর্কে অল্প কিছু কথা। 


ছোটগল্প কথাসাহিত্যের একটি বিশেষ রূপবন্ধ। আর বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ছোটগল্পের ঐতিহ্যময় ধারা চিরপ্রবহমান। রবীন্দ্রোত্তর যুগ ধরে বর্তমান সময় পর্যন্ত বহু গুণী কথাশিল্পীর হাতে চলেছে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ধারাবদল। মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের গল্প পড়লে মনে হয় তিনি সেই বহমান ধারার একজন যোগ্য উত্তরসূরি। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি লিখছেন আর সমকালীন বাংলা সাহিত্যে গড়ে তুলেছেন একটি নিজস্বতা।


কোনও বই নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তার রচনাকাল ও প্রকাশকাল জানাটা অত্যন্ত জরুরি।  ২০০৬ থেকে ২০২০ এই পনেরো বছরে লেখকের প্রকাশিত গল্পের সংখ্যা একশোরও বেশি। প্রথম দিকের ৫০ টি গল্প তাঁর পূর্ববর্তী গল্প সংকলন 'চংক্রমণ' ও 'লাল ডায়েরি'তে রয়েছে। আলোচ্য গল্পগ্রন্থটি তাঁর পরবর্তী ৫০ টি গল্প জুড়ে সংকলিত। তবে লেখক বইটির মুখবন্ধে বলেছেন, প্রকাশকালের ক্রম অনুযায়ী নয়, এখানে গল্পগুলি সাজানো হয়েছে স্বাদের বৈচিত্র অনুযায়ী। এই গল্পগ্রন্থের  প্রায় সবগুলি গল্পই প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন সুপরিচিত সাহিত্যপত্রিকায় এবং সংবাদপত্রগুলির সাহিত্যের পাতায়। 


'পঞ্চাশে ৫০' হাতে নিয়ে গল্পের ভেতর ঢুকে পড়ার আগে অবশ্যই পড়ে নিতে হয় চমৎকার মুখবন্ধটি। জীবনকে দেখার চোখ আর সেটা কলমের দৃঢ়তায় কালো অক্ষরে ফুটিয়ে তোলার দক্ষতাই তাঁকে লেখক হিসেবে স্বতন্ত্র করে দেয়।  "সাহিত্যের মূল উপজীব্য হল মানুষ। যিনি লিখছেন তিনি আধুনিক কিনা সেটাই দেখার। তিনি যে চোখে জীবনকে দেখেন তা যখন পাঠকের দেখার সঙ্গে মিলে যায়, পাঠক নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে শনাক্ত করেন সেই লেখাটিকে, তখন সেই লেখা সাহিত্যে উত্তীর্ণ হয়।"    "যিনি লেখক তাঁর দ্বৈতসত্তা থাকে। একজন ব্যক্তি, আর একজন লেখক। যখন একজন ব্যক্তি আলিঙ্গন করে প্রেমিকাকে, আহ্লাদিত হয় সন্তানের জন্মে বা প্রিয়জনকে দাহ করে শ্মশানে, আনন্দে উদ্বেল হয় কিংবা লীন হয় অপমানে, সেই সব মুহূর্তেও, ব্যক্তিমানুষটির লেখকসত্ত্বা ভেবে যায় লেখার কথা।" --- এরকমই কিছু একান্ত নিজস্ব আবেগ, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন লেখক তাঁর বইয়ের মুখবন্ধে।


 'পঞ্চাশে ৫০' সংকলনে লেখক  মলাটবন্দি  করেছেন জীবনের নানা  অভিজ্ঞতা। গল্পগুলি পড়লে চোখের সামনে ভেসে ওঠে লেখকের অবলোকন, পাঠক মনে অনুরণন তোলে তাঁর অনুভব ও আকুতি। তিনি  তাঁর গল্পে বাস্তব নিষ্ঠতা, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নির্মম সততার পরিচয় দিয়েছেন।  জীবনের ছোট-খাট ঘটনা সংযম ও লঘু কোমল স্পর্শে বৈচিত্র লাভ করেছে। জীবনের কলগুঞ্জন যেমন প্রতিধ্বনিত হয়েছে সেখানে, তেমনি প্রতিফলিত হয়েছে মানুষের হৃদয়বৃত্তির রূপায়ণ। 


পঞ্চাশটি গল্পের প্রতিটির বিষয়বস্তু আলাদা আলাদা করে তুলে ধরতে গেলে এক দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন। কারণ চরিত্রের ভিন্নতায় ও বিষয়ের বৈচিত্রে প্রতিটি গল্প একে অপরকে ছাপিয়ে গেছে। তবে সামগ্রিক ভাবে বিচার করলে সংকলনের গল্পগুলিকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। বেশ কিছু গল্পে বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি মানুষের জীবনের মানচিত্র ফুটে উঠেছে। সামাজিক অবক্ষয় ও অর্থনৈতিক অবস্থান, মানুষ ও সমাজের আন্তঃসম্পর্কের মধ্যে দিয়ে জীবনের সূক্ষাতিসূক্ষ্ম বিষয়গুলি ব্যাপকভাবে লেখক তুলে ধরেছেন গল্প গুলিতে।


অপরদিকে গ্রন্থের সিংহভাগ গল্পই মনস্তাত্ত্বিক। নারী- পুরুষের মনস্তত্ত্ব ও মানসিক অভিব্যক্তি,  সম্পর্কের জটিল সমীকরণগুলির দিকে গল্পকার খুব সতর্কতার সঙ্গে আলোকপাত করেছেন। মানুষের জীবনযাপনের ছোট ছোট সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, ঘাত- প্রতিঘাত তাঁর গল্পের উপজীব্য। বইয়ের প্রথম গল্প  'নীল লোহিত' গল্পে লেখক দু'রকম মানসিক অভিঘাত ও যন্ত্রণায় জর্জরিত দু'জন সন্তানহারা পিতার মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেছেন নিপুণ দক্ষতায়।  


শিশুমনের গভীরেও তাঁর অবাধ বিচরণ। 'মনখারাপের বেঞ্চ' গল্পে 'রুশো'র জন্য বড্ড মন কেমন করে ওঠে। তবে সরলীকৃত সূচকে মনস্তাত্ত্বিক দিকটিকে দেখার ব্যাপারে বিশ্বাসী নন গল্পকার। মানসিক জটিলতা ও রক্তমাংসের সামান্যতম স্পৃহা নিয়ে অনিয়ন্ত্রিত  মানবিক আবেদনকে নিস্পৃহ দৃঢ়তায় ফুটিয়ে তোলেন বিষয়বস্তুর পরতে পরতে। মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণই শুধু নয় 'অপেক্ষা', এবং 'দ্বিতীয়া' গল্পদুটিতে লেখক পাঠককে রীতিমত চমকে দিয়েছেন। মানসিক রোগ, তার লক্ষণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা তাঁকে কখন যেন একজন মনোবিদ করে তুলেছে।


গ্রন্থের পঞ্চাশটি গল্পেই স্পষ্ট পরিলক্ষিত হয় লেখকের গভীর জীবনদর্শন বোধ। জীবন ও মানুষ সম্পর্কে বোধ পাল্টে দেবার গল্প 'খেলা যখন', 'প্রতিদ্বন্দ্বী', 'মস্কিপুরে আর আসব না', ডার্করুম', 'অসবর্ণ'। গল্পগুলির বিশেষ দিক হল কাহিনির মধ্যে অপ্রত্যাশিত বাঁক। পরতে পরতে চমক। লেখক তাঁর পাঠককে গল্পের ভেতর চুম্বকের মত আটকে রাখতে জানেন। তাছাড়া গল্পগুলি যেহেতু মূলত মধ্যবিত্ত জীবন ও মূল্যবোধের উপর নির্মিত, ফলত শিক্ষিত সমাজ খুব সহজেই চরিত্রগুলির সঙ্গে একাত্ম হতে পারেন। গল্পকার আমাদের চারপাশে দেখা মানুষগুলোর ভেতরে লুকিয়ে থাকা নানা অজানা জগতের হদিশ দিয়েছেন। তবে 'মারাংবুরু', 'আরোহী', 'পনোতি', 'খাদক' গল্পগুলিতে লেখক খেটে খাওয়া মানুষদের জীবনযাত্রার কথাও বলেছেন অত্যন্ত মানবিক আবেদনে। 


"পঞ্চাশে ৫০' সংকলনের গল্প গুলির সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ একটি দিক হল নানা আঙ্গিকে চরিত্র রূপায়ণ। আমার বিচারে  গ্রন্থের অন্যতম সেরা গল্প 'অপেক্ষা'। সেই গল্পের 'বৈজুয়া ও মধুবনি' চরিত্রদুটি পাঠকের মনকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়। একসময়ে কোনও এক রাজনৈতিক নেতার ছায়াসঙ্গী ছিল বৈজুয়া। সে এখন দশ হাজার টাকা মাইনেই শপিংমলের কর্মচারি। সপ্তাহের সাতদিন বারো ঘন্টা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ডিউটিরত বৈজুয়ার এখন একটাই অপেক্ষা, লাঞ্চ ব্রেকের। অন্যদিকে তার প্রেমিকা মধুবনি বৈজুযার হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় মানসিক রোগের শিকার হয়। রাঁচি হাসপাতালে আজও সে অপেক্ষা করে আছে বাড়ির লোক কিংবা বৈজুয়া এসে তাকে নিয়ে যাবে কোনও দিন। মধুবনির এই বেদনাদায়ক পরিণতি প্রতিটি পাঠক হৃদয়কে মথিত করে। 'বাওবাব' গল্পের 'করালী স্যার', 'গোধূলি মানুষ' থেকে 'শমীক' প্রত্যেককেই কাছ থেকে ছুঁয়ে দিতে পারে পাঠক।


মানবমনের আলো-আঁধারি গহ্বরে রহস্যজনক বৈশিষ্টগুলি অপার্থিব অনুভূতির সঞ্চার করে। 'হনন', 'মনের ভেতর মন' গল্পদুটি পড়তে পড়তে গা ছম-ছম করে ওঠে। হননে 'সাধু হাজরার' জীবনযাপন পাঠকের মনে একরকম আতঙ্ক জাগিয়ে তোলে। 'পিশাচপুজো' এবং 'নদীর ধারে বাড়ি' গল্পে সুপারন্যাচরাল জগতের অনৈসর্গিক, আধিদৈবিক উপাদানের ব্যবহার গল্পগুলিকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে। অন্যদিকে 'অলীক পৃথিবী' গল্পে ভার্চুয়াল জগতের মোহমায়া পাঠকের সামনে হাজির করে এক অন্য পৃথিবী। 


মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের গল্পে প্রেম ও বিরহ দুটোই আসে ঘুরে ফিরে।  তবে রগরগে প্রেমকাহিনি নয়, তাঁর গল্পে প্রেম নিস্তরঙ্গ প্রবাহের মতো। স্নিগ্ধ, শান্ত, মোলায়েম। আবার তীব্র বিরহযান্ত্রণাও পাঠকের মনে শূন্যতার সৃষ্টি করে। প্রেম, বিয়ে, ডিভোর্স, আবার বিয়ে এবং তার ফলস্বরূপ সম্পর্কের টানাপোড়েনে জর্জরিত দাম্প্যত্যের ছবি ধরা পড়ে 'বিরহ বিরহ দূরে প্রেম', 'তিতির কান্নার মাঠ', 'সূর্যাস্তের নদীর তীরে', 'অন্ধকারের নদী ', 'মন খারাপের বেঞ্চ', গল্পগুলিতে। অন্যদিকে 'হৃদয় এখন' গল্পে বর্তমান প্রজন্মের 'যোজনগন্ধা', 'আহেলি', 'শায়েরি'দের হৃদয়ের ভালোবাসা যান্ত্রিক। সময় ও গতিময় জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রেম, ব্রেকআপ আবার প্রেম এইসব বিষয়গুলি তাদেরকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে না। জীবনের খাতিরে এগুলিকে তারা খুব স্বাভাবিকভাবে  মেনে নিতে জানে। 


মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের গল্পের আর একটি বিশেষ দিক হ'ল প্রকৃতি ও মানুষ। অক্ষরশিল্পী তাঁর লেখনীতে  প্রকৃতির পটভূমিতে চরিত্রাঙ্কন করেছেন নিপুণ মুন্সিয়ানায়। উত্তরবঙ্গের পাহাড়, জঙ্গল, পাহাড়ি জনপদ অপূর্ব বর্ণনায় পাঠকের হৃদয়কে আন্দোলিত করে। গল্পের প্রেক্ষপটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রকৃতির নৈসর্গিক বর্ণনা বেশ কয়েকটি গল্পকে এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে। গ্রন্থের প্রথম গল্প 'নীল লোহিত'। এখানে ড্রোলমার সৌন্দর্য্য আর পাহাড়ি উপত্যকায় ফুটে থাকা নীল পপির ওপর রঙিন মনার্কের আনাগোনা নিখুঁত ভাবে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও 'ডাইন', 'মনখারাপের বেঞ্চ' 'এক পশলা রোদ্দুর', 'মধুকুলকুলি' প্রভৃতি গল্পে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বর্ণনা পাঠককে উপহার দেয় ভ্রমণের অনাবিল আনন্দ। 


অলোচ্য গল্পগ্রন্থের গল্পগুলিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আকর্ষণীয়, প্রয়োজনানুগ, বাহুল্যমুক্ত এবং কাহিনির সঙ্গে সামঞ্জস্যপুর্ণ। কোথাও কোথাও হাস্যজ্বল কৌতুক রসিকতায় গল্পের ঘটনা বিচিত্রতা লাভ করে এবং ঘটনাগুলো ধারাবাহিকভাবে ঘটতে ঘটতে একটি পরিণতির দিকে অগ্রসরমান হতে থাকে। আর পাঠকও সেই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করে গল্পের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম করে তোলে। আমার সেরা পছন্দের তালিকার আর একটি গল্প  'ফেরা'। জলপাইগুড়ির শহরতলির এক মেধাবি স্কুলছাত্রী সঞ্চারীর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ছোট্ট ঘটনা তার জীবনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়। তারপর ধীরে ধীরে ঘটনার সূত্র ধরে এগিয়ে যেতে যেতে তার স্কুল শিক্ষকের হাত ধরে আমরা পৌঁছে যাই লন্ডনের লিভারপুলে। শিক্ষিতা, স্মার্ট সঞ্চারীর কাছে। তার সুসজ্জিত, সুবিশাল লিভিংরুমে বসে ফিনফিনে বোন চায়নার কাপে চা খেতে খেতে ওর স্বাভাবিক জীবনে ফেরা এবং উন্নত জীবনে উত্তরণের গল্প শুনে সত্যি মন ভালো হয়ে যায়। অধিকাংশ গল্পই দাবি করে পাঠকের অখণ্ড মনোযোগ। পরতে পরতে খুলতে থাকে কাহিনি। একটি গল্প পড়া হলে তৎক্ষণাৎ পাতা উল্টে যাওয়া যায়  না। কিছুক্ষণ একটা ঘোরের মধ্যে থাকতে হয়। আর এখানেই গল্প পাঠের প্রকৃত আনন্দ।


'পঞ্চাশে ৫০' গল্প সংকলনে অধিকাংশ গল্পের শিরোনাম সহজ, সরল।  গভীর ব্যঞ্জনা অনুপস্থিত। প্রতিটি গল্পই সরল চলিত ভাষায় লেখা। লেখক ছোট ছোট বাক্যবিন্যাসে গল্পের অবয়ব ফুটিয়ে তুলেছেন। ফলে খুব সহজেই পাঠক কাহিনি এবং চরিত্রের কাছাকাছি পৌঁছে যান।


লেখকের পঞ্চাশ বছর বয়সে পদার্পণ এবং  পঞ্চাশটি গল্প নিয়ে সংকলিত বইটির 'পঞ্চাশে ৫০' নামকরণে অভিনবত্ব এনে দিয়েছে। এছাড়া  শিরোনামাঙ্কিত ঝকঝকে, অনাড়ম্বর প্রচ্ছদ, পরিস্কার ছাপা বইখানিকে যথেষ্ট দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য তাঁর গল্পে প্রতিটি চরিত্র এবং ঘটনা নিয়ে পাঠককে নিজের মতো করে চিন্তা করার অবকাশ দিয়েছেন। তাই তাঁর কাছে নিবিড় পাঠকদের আত্মবিশ্বাসী প্রত্যাশা স্বাভাবিকভাবেই গগনচুম্বী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস অক্ষরচাষি মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য  আরও দীর্ঘদিন বাংলা সাহিত্যের সেবা করবেন আর 'পঞ্চাশে ৫০' সকল পাঠকের কাছে হয়ে উঠবে একটি প্রিয় বই।

Comments