ভ্রমণ বিষয়ক - শৌভিক রায়


এক টুকরো ডুয়ার্স....ছবিতে

(প্রথম পর্ব)


সমাজ মাধ্যমের বিভিন্ন গ্ৰুপে যখন দেখি যে, দার্জিলিং শহরে তোলা ছবিও  'ডুয়ার্স' শিরোনামে প্রদর্শিত হচ্ছে, তখন একটু খারাপ লাগে বৈ কি! কেননা অবিভক্ত দার্জিলিং জেলার কিছু অংশ একদা  ডুয়ার্সের মধ্যে থাকলেও, কালিম্পঙ জেলা হিসেবে গঠিত হওয়ার পর থেকে, দার্জিলিং জেলার প্রায় কোনও অংশই এখন ডুয়ার্সের মধ্যে গণ্য করা যায় না।  


অতীতে ভুটান পাহাড় থেকে ১৮টি গিরিপথের মাধ্যমে সমতলে আসা যেত।  সার্জন রেনি তাঁর BHOTAN AND THE STORY OF DOOARS WAR (1866, 1872) বইটিতে বলেছেন যে, এই  গিরিপথগুলির এগারোটি  তিস্তা থেকে মানস পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এই অঞ্চলটি বেঙ্গল ডুয়ার্স নামে পরিচিত।  বাকি সাতটি  মানস থেকে  অসমের ধানসিঁড়ি পর্যন্ত অসম ডুয়ার্স নামে পরিচিত। পরবর্তীতে এলাকার রদবদল ও দেশ স্বাধীন হলে, ডুয়ার্স অঞ্চল খানিকটা সংকুচিত হয়ে আসে। আধুনিক এই সময়ে ডুয়ার্স বলতে আমরা সংকোশ নদী থেকে তিস্তা পর্যন্ত ভূ-ভাগকে বুঝি। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, সংকোশ হল পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের সীমা নির্ধারণকারী নদী। অন্যদিকে তিস্তা দার্জিলিং ও কালিম্পঙকে আলাদা করেছে। 


ডুয়ার্স এক অসমতল মায়াময় ভূমি। এখানকার অরণ্য, চা-বাগান, জনজাতি, আবহাওয়া, খরস্রোতা নদী, হিংস্র অরণ্যচারী সবসময়েই আকর্ষণের বিষয়। তাই নানা মানুষের আগমনও এখানে অবিরাম। কিন্তু  ক্রমাগত নগরায়ণ, অরণ্যনিধন, দূষণ ডুয়ার্সের পরিবেশকে নষ্ট করছে। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত অচিরেই এই অদ্ভুত সুন্দর ডুয়ার্স তার সব গৌরব হারাবে। 


ডুয়ার্সের টানে বারবার ছুটে যাই আজও ... ধরে রাখি ডুয়ার্সের কিছু মুহূর্ত নিজের মতো করে। সেই সব ছবিই এই ছোট্ট লেখার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিয়ে...


পরিচয় নিষ্প্রয়োজন।

ফুটবল খেলায় মেতেছে শিশু বৌদ্ধ লামা।

বীরপাড়ার কাছে বান্দাপানি চা-বাগানের পথ, এখানে রয়েছে ১২৫ বছরের পুরোনো চা-গাছ।

পূর্ব জলদাপাড়ার নীল জলের শিশামারা নদী।

বক্সার অরণ্যে।

কুমারগ্রামদুয়ারের কাছে নিউল্যান্ড পোস্ট অফিস। বয়স একশোর ওপরে। ডুয়ার্স থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কাঠের তৈরি এই বাড়িগুলি।


গয়েরকাটা চা-বাগানের এই কোয়ার্টারে জন্মেছিলেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার।


গরুবাথান হয়ে লাভা যাওয়ার পথে মহাকাল মন্দির। পাশেই রয়েছে ছোট্ট দোকান চা-পানের বিরতি নেওয়ার জন্য।


চা-পাতা তুলে ফ্যাক্টরির পথে, দলমণি ডিভিশন, দলগাঁও।


চা-বাগানের মধ্যে দিয়ে পথ।


চালসা-মেটেলি পথ।


ছিপড়ার সবুজে।


বৃষ্টি আর শ্যাওলা ডুয়ার্সের পরিচিত দৃশ্য, সেন্ট্রাল ডুয়ার্স টি এস্টেটের একটি বাড়ি।

ভারত-ভুটান সীমান্তেে ভুুুুটানের শহর ফুুুুুুন্টশিলিংয়ের গুুুুম্ফা।


মধুবনী ব্রিজ, গয়েরকাটা।


ভারতের অন্যতম ক্ষুদ্র জনজাতি টোটোদের গ্রাম মাদারিহাট থেকে ২৪কিমি দূরের টোটোপাড়ার একটি বাড়ি। এরকম বাড়ি  আজকাল আর দেখা যায় না। তথ্যের ভাষায় এই বাড়ির নাম হল
নাকো-শা।


মেঘে ঢাকা কালিপ্ঙ।


রাজাভাতখাওয়ার জঙ্গলের ভেতর রেলপথ, বক্সা রিজার্ভ।


সংকোষ চা-বাগান।


সেভকের তিস্তা, কোন এক বর্ষাদিনে।


সেভক করোনেশন ব্রিজ। 


সীমান্ত শহর জয়গাঁ ও তোর্ষা নদী।


আংরাভাসা নদী, গয়েরকাটা।


উত্তরের জীবনরেখা তিস্তা ও উত্তরের মুকুট কাঞ্চনজঙ্ঘা।


একসময় এই জাতীয় দোকান ডুয়ার্সে প্রচুর পরিমাণে দেখা গেলেও এখন এদের সংখ্যা কমে এসেছে। মিনগ্লাস চা-বাগান, ডামডিম।


উদ্ধত কাঞ্চনজঙ্ঘা আর ডুয়ার্সের একটি গ্রাম।


এরকম ছোট বাজার দেখা যায় চা-বাগান গুলির ভেতর।


এরকম প্রস্রবণ ডুয়ার্সের বেশ কিছু নদীর জলের উৎস। মুজনাই, বাঙ্গাবাড়ি ডিভিশন।


গুমটু ভুটান এর একটি দৃশ্য, এপারের জনপদ মাকড়াপাড়া নামে পরিচিত।


ওদাল ফুল। এর থেকেই নাম হয়েছে ওদলাবাড়ি। 


(ছবি - লেখক)
ক্রমশ...  

Comments