কবিতা - অনিমেষ

পর্ব ১



সে যাওয়ার জন্য কথাই যথেষ্ট ছিলো।মেঘের মতো ঘিরে ধরে যে শনাক্ত করণ চলছিলো তার মাঝেই ঝটকা বাতাস এলোমেলো করলো সবটা। আসলে কথা আর তার মাঝের বিরতির ফাঁকে ফাটল ধরা দিলে আরও মোলায়েম করে রেখে আসি স্বর। ভাঙবার জন্য শেকল, শেকলের চিরায়ত বন্ধনী সব মায়াবী, ভেতর ভেতর এক শব্দ এক অক্ষর ঘুরতে থাকে, আমরা জানি গোপনে কোনো চুক্তিই আলোছায়ার খেলায় এসে পড়ে না। অনন্ত মৃত্যু আর দরবারের উপর এসে পড়ে হাওয়া ।


অন্ধ গানের দেশ চিৎকারে ছিঁড়তে থাকে অট্টহাসি। খলবায়ুর বেশে আমাদের শহর কাঁপিয়ে যায়। জানি আলো আর তার রেখার মধ্যে বিস্তর তফাৎ, এখানেই মধ্যমণি বিস্তার লাভ করতে থাকে। খোলা নরকের মাঠ, আর দুর্গের উপর স্থায়ী আক্রমণ বারবার পেছনে ঠেলতে থাকে ।ব্যক্তিগত গদ্যের কাছে রেখে আসি বিশ্বাস। আসলে ভাঙনের আগে আগেই আমরা সবাই বাঁচতে চাই আর বাঁচার মাঝেই গুলিয়ে ফেলি হিসেব। খাতা ধরে বাতিলের তালিকা আরও লম্বা হয়।


ছেঁড়া কাঁথার দেশে কোথায় যাই বলো! এই যে খুন আর সন্ত্রস্ত আবহাওয়া লুটপাট চালাচ্ছে তার ধমনীতে, এর তো বিহিত হওয়া দরকার! পায়ের মাটি আলগা হলে, বিষণ্ণতার তরমুজ সবুজ লালের দোলাচলে ঝিমিয়ে পড়ে। আর রেখে আসা গুস্তাখি ! এনিমেশন থেকে বর্জিত জীবন আদতে এক ফর্মার  বই, উপন্যাসের মোটা পুস্তকের মাঝেমাঝে ঢুকে থাকে। এ কোন সাধনা!


জানবার মহলের সরে যাওয়া পর্দাও টের পায়, চলে যাওয়া পায়ের ছাপ কার, কতবার বিছানার চাদর শুকিয়ে দিতে থাকে বালিশের উপর পড়ে থাকা ছাই। ওরা সব জানে। কোনো নির্দেশনা মানতে মানতে পুড়তে থাকা আদিম শরীর আর ভেদাভেদের কান্না শুষে নেয় ধীর বালি।


ভেসে যাবে বলে তো আর কেউ ভাসতে চায়না! শীতের রাত ও জানে আমরা ফকির, ফকিরের কোনো ঘর নেই, জমিন দিয়ে দিলে সেখানেই থাকবে ঘর সে বাঁধবে না। তবুও মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে জল, ঢিলেঢালা চলা উন্নয়ন সব আদতে শরীরের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র নিয়মের মতো। 


দুপুরের রোদ, মাছের বাজার, আঁকাবাঁকা শোক, বিষাদের রাত, ইউনিফর্ম ভোলা পিস্তল, আততায়ীর পকেট, সেলফোনের চার্জ সবকিছু নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে চলে, আমাদের যে একটা নদী বুকের ভেতর আছে তার দলিল, মর্গেজ দিয়ে ফিরে আসে আবার। কোনো নিছক দেখানো নয়, জানাজানির বেঞ্চে বসে থাকলে উড়তে থাকে আবহমান গীত। ভুলে যায় সব হারানোর ঢেউ। আছড়ে পড়া প্রতিটি বিন্দুর এই সংকল্প রয়ে গেছে, ভিজিয়ে শুকনো করে রেখে দেবে, ফেলে যাওয়া খোলোসের মতো। এই যে পরিণতি, পরিণত নিরাময়, এর বুজরুকি হাওয়া কতদিন ছেয়ে থাকবে! মৃত্যুর ও তো নিজস্ব মাটি আছে! আঁকড়ে ধরে থাকলেই যদি ঘর হলো! ঢেউ হলো ছায়ার, সেখানে দীর্ঘদিন অন্ধকার রেখে যাওয়া কেন তবে! কোনটা আগে মুখোমুখি হয়ে আর না ফেরা!না ফিরে আসবে জেনেও, পথ বদলে আত্মঘাতী রাতকে নিস্তব্ধ করে যাওয়া জেনেবুঝে! কোথায় এই বীভৎস মায়ার সংযোগ!...



Comments