গুচ্ছ কবিতা - সৈকত সেন


অপেক্ষা


তোমার ভেজা চুলের গন্ধ 

সবুজ হয়ে ছেয়ে আছে আমার বুকে।

তোমার নিবিড় পাহাড়ে ঘন ব্যস্ততা।

আমি দুহাতে আঁকড়ে ধরে আছি 

তোমার চলে যাবার পথে ফেলে যাওয়া 

একটুকরো নীল আকাশ।

আজকাল এখানে আর বৃষ্টি আসে না।

তবুও তোমার ফেরার অপেক্ষায় 

বুকের ভেতর একটু ফাগুন গুছিয়ে রাখি।



রামধনুর গল্পকথা


কোন বৃষ্টিকালের ভেতর আত্মগোপন করে 

তুমি রামধনু সাজাও।

আর আমি কোন এক নিরালা দুপুরে 

কিছুটা গল্প রেখে আসি নদীতীরে।

তারপর নদীর পাশে পড়ে থাকা এক ফালি ভুঁই

বুকের উপর হলুদ বিকেল বিছিয়ে

রামধনুর গল্পকথা আঁকে।



একটিই গাছ


ইচ্ছে করে মুক্ত করি তোমার শেকল পা

হাত ধরে নিয়ে যাই,

ঘুমন্ত সাগরের বুক ফুঁড়ে সদ্য জেগে ওঠা

সেই নির্জন দ্বীপভূমিতে,

যেখানে একটিই মাত্র গাছ।

ঝড় আসুক,তুফান আসুক 

আছড়ে পড়ুক বড় কোন ঢেউ।

ঐ গাছটিই হবে আমাদের আঁকড়ে বেঁচে থাকার

একমাত্র সম্বল।



প্রজাপতি দিন


তুমিই পার-আমার বুকে 

আস্ত একটা গতিময় নদী এঁকে দিতে।

নদীর দুধারে স্বপ্নের টেরাকোটা।

আমি তাতে রোদে শুকনো কিছু ইচ্ছে 

আর তার সঙ্গে কিছুটা বৃষ্টির গুড়ো 

ছড়িয়ে দিতাম।

তারপর কোন এক কালবোশেখির দিনে

আমরা দুজন ছুটে যেতাম 

একটি প্রজাপতির দিকে।



কবিতা যাপন 


চলো এবার এই পথের পাশেপাশাপশি শুয়ে 

ঐ অনন্ত আকাশ দেখি।

ভাষা বুঝে নিই দূরের নক্ষত্রদের।

একান্ত আপন মেঘেদের কাছে শিখে নি

টুপ টাপ বৃষ্টির গান।

তারপর চাঁদের আলোর চাদর টেনে নিয়ে

ফিসফাস কবিতা যাপন।



বেরং


আজকাল তেমন করে আমার আর 

ফাগুন পায় না।

মাঝে মধ্যে বিছানায় 

একফালি রোদ আসে ঠিকই,কিন্তু তাতে 

রঙ থাকে না কোন।

পাশের ঘরের আয়নায় চিপকে রাখা টিপেও 

পুরু ধূলোর আস্তরণ।

Comments