কবিতা - সুদীপ সেন

আমার দুর্গারা 

 

আমি  মাটির দুর্গা প্রতিমাকে দেখেছি। 

 

বাইরে বের হয়ে যখন আমি কারো নাম জানতে চেয়েছি

সে বলেছে আমার নাম দুর্গা। 


তাহলে দুর্গা রা নিশ্চই সর্বত্র আছেন। 


আমায় কাছে নারীই হলো দুর্গা 

শক্তিরূপেণ সংস্থিতা। 


এখন রাজপথে

বাস-আটো চালায় 

দুর্গারা। 

 

বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয় সেও দুর্গা। 

 

খাকি পোশাক পরে সবাইকে নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে রাখে 

দুর্গামেয়েরা। 

 

আমি দেখেছি শহরের রাস্তায় সাইকেল চালিয়ে মাছ বিক্রি 

এক দুর্গা। 


আবার এই নারীরাই  মাটিকে তিলে তিলে ভেঙেগড়ে দুর্গার রূপ দেয়। 


ভিড়ঠাসা লোকাল ট্রেনে ফুলের ঝাকি নিয়ে সকাল সকাল শিয়ালদহ স্টেশনে পা রাখেন  দুর্গারা। 

 

আর আমরা এই অসহায় দুর্গা দের কখনো কখনো কাঠ গোড়ায় দার করিয়ে এক ঘর আদালতে অনেক কুৎসিত প্রশ্ন করি। 

 

রক্ত মাংসের দুর্গা রাও বাঁচতে 

চায়। 

অন্ধকার ঘুটঘুটে গলির ভেতর লাঞ্চিত অপমানিত দুর্গার মুখ আমরা কজন দেখতে যাই। 


তাই নারীই দুর্গা,  

আর দুর্গারাই যেকোনো এক নারী। 


তাই তারা আজ কুমোরটুলি থেকে নিজেরাই পায়ে হেঁটে 

বেরিয়ে পরেছে। 


মেদিনীপুরের জঙ্গল  থেকে 

 দুর্গাপুরের কলিয়ারিতে। 


আমাদের দুর্গারা আকাশপথে  পাচার হয়ে যাচ্ছে  দুবাই থেকে 

অনেক দূরদেশে। 


আমার দুর্গাদের যখন কখনো 

বয়েস বেড়ে যায় 

তখন বৃদ্ধাশ্রমে বসে বসে  একাই তখন তারা কাঁদে। 

 

এভাবেই একদিনে নয় তিলে তিলে দুর্গারা শেষ হয়ে যাচ্ছে,  

নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে। 


এটাও একটা বিসর্জন 

কই কখনো একবারও তো আমরা এমন দূর্গাদের খোঁজ

রাখিনা। 

হাত জোর করে একবার ও বলিনা মা আসছে বছর তোমরা আবার এসো। 

 

কিন্তূ এরাই বছর বছর সময় অসময়ে আবার ফিরে আসে নারী রূপে দুর্গা হয়ে।

Comments