গুচ্ছ কবিতা - সৈকত সেন



নেপথ্যের লেখাগুলি


এক


এখন প্রতিরাতে জ্বর আসে,

তারপর বিকার

মেঘাচ্ছন্ন ফাঁকা ফুটবল মাঠের 

গোলপোস্টে এ দাঁড়িয়ে 

তুমি হাততালি কুড়োও

আর ওদিকে অজস্র অশরীরি আত্মার দীর্ঘশ্বাসে

মিশে যেতে থাকে আমার প্রলাপ

কতগুলো বোবা হাত এসে

রক্তের স্রোতে টেনে নিয়ে যায় ....

অজস্র ঠোঁট, হাত, জিভ, যোনি এসে 

ঢুকে পড়তে চায় আমার পাকস্থলীর ভেতর

বিবমিষা হতে থাকে... 

বহুতল ইঁদুরের গর্তে ঢুকে পড়ে সাপ

বিষ দাঁতে কাটতে থাকে 

যাবতীয় জন্ম পরিচয়।


দুই


তৃষ্ণার্ত জিভের ডগায় চেটে নিচ্ছ অভিশাপ

অজগর চোখে দেখতে পাও নি

মায়ের নিরীহ আকুতি

যে দরজা টপকে নিজেকে ঈশ্বর ভাবছ

তার আড়ালেই রেখে যাচ্ছ নিজস্ব সর্বনাশ

বোবা- পঙ্গু করে দিয়ে যাচ্ছ যে গাছ

তার বীজেও মহিরূহের সম্ভাবনা

তুমি বুঝতেও পারছ না

শেকরের কতটা গভীর পর্যন্ত

সঞ্চয় করে চলেছে সাহস ও শক্তি

একদিন বাড়িয়ে দেবে অদৃশ্য হাত 

এঁকে দেবে অবিচারের যবনিকা।


তিন


 সব গুলো অন্ধকার রাতের কাহিনী 

লেপ্টে যাচ্ছে পাপ পুণ্যের হিসেবের খাতায়

ঝলসে যাওয়া শরীর থেকে 

আইডেন্টিটি মার্ক মুছে গেলেও

ছাইয়ের প্রলেপ মেখে 

কাঁচি চালাতে শেখেনি  ওরা   

আহ্নিকগতি ও ঋতুপরিবর্তন যদি ঠিক থাকে

একদিন ওরাই ইতিহাস লিখবে

পায়েসে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে 

সেদিনের অপেক্ষায় আমি, আমরা,

আমাদের উত্তরপুরুষ।

 

চার 


যে অস্ফুট কান্না অতিক্রম করেছে আগুন

বর্ণপরিচযের প্রতিটি অক্ষর দিয়ে

তারঁ জন্য লিখে যেতে চাই রোদ্দুরের কাহিনী

কৃত্রিম শব্দ গুলো আজ 

চরম নির্দেশিকার মুখোমুখি

একটা আলো জ্বলছে

আত্মগ্লানির আঁশটে গন্ধ মিলিয়ে গেছে আকাশে

অন্ধকারের অভ্যাসে বিরতি টেনে

আজ লিখে রাখি নেপথ্যের কথাগুলি।


চিত্র - শ্রীহরি

Comments