অনুবাদ কবিতা - ডঃ অলোক সাহা


দেশ এবং অন্যান্য বিষয়ক

[অসমীয়া ভাষায় মূল রচনা : হীরেন ভট্টাচার্য
বাংলা অনুবাদ : ডঃ অলোক সাহা]



দেশ যদি ডাকে আদেশ লাগে না

আমার উদ্দাম রক্তে টগবগিয়ে ওঠে 
এক হাজার এক যুদ্ধের ঘোড়া!


আমার শব্দের শোভাযাত্রা হোক, ক্রূর কূটিল রাত্রির প্রহরী হোক, ঝলসে উঠুক বিক্ষোভের তীক্ষ্ম তরোয়াল,  টলমল শব্দের উচ্ছ্বসিত রক্তের প্রবাহে প্রবাহে।

আমার উত্তরীয়ে ফুটে ওঠে কাতরতা, ক্ষীণ হয় ঘনিষ্ঠ নিঃশ্বাস, বড় অস্বস্তি আমার গভীরে বড় অস্থিরতা। সতর্ক প্রহরী বাতাস হঠাৎ কৌতূহলী হয়ে যেভাবে জলের ভেতর মাছকে চঞ্চল করে তোলে, আমার চৌদিকে উদ্যত মৃত্যু; মৃত্যুর কৌশলী হাত অথবা মৃত্যুজিৎ প্রতিভার আচ্ছাদিত আভাস।


বাঁশির  সুর
অন্ধকারের ভেতর দিয়ে যেতে যেতে আলোর শঙ্খনাদ শুনলাম অকস্মাৎ। বজ্রের জন্য রেখে দেওয়া আমার হাড়ে অনুভব করলাম বাঁশির শব্দ। বাঁশিটি রক্তের ভেতর, হাড়ের ভেতর মিশে ছিল এতকাল। তার ওপর স্তূপীকৃত ছিল সময়ের কিছু শুকনো পাতা।  শুকনো পাতাগুলো সরিয়ে দিল কে?
কার গো এমন স্নিগ্ধ হাতখানি!

##

জ্যোতি, সেই জ্যোতি (স্বৰ্গীয় জ্যোতিপ্ৰসাদ আগরওয়ালার  স্মৃতিতে)


আমাকে এই সংকীৰ্ণতা থেকে তুলে ধরো। তোমার সাথে গাইতে দাও ঝড়ের গান, বজ্ৰের গান।
মৃত্যুর এই হিম-শীতল হাতে ঢেকে রাখা এ হৃদয়কে একঝলক আকাশের আশ্বাস দাও। ঘৃণা আর অবিশ্বাসে ঘিরে ধরা সংকীর্ণ জীবনে আসুক সাহসের দু’কূল ছাপানো বান। আবেগে থরথর অন্ধকার প্রহর ভেঙে তোমার গানে করি জ্যোতিস্নান।

[হীরেন ভট্টাচার্য অসমীয়া ভাষার জনপ্রিয় কবি।
‘সুগন্ধি পখিলা’-র লেখক এই কবি একাদেমী পুরস্কারে সম্মানিত। অসমীয়া পাঠক তাঁকে হীরুদা বলে ডাকতে ভালোবাসেন]




Comments