প্রবন্ধ - নীহারুল ইসলাম



দাসরাজা ভিল্ল এবং মহাভারতঃ 

প্রসঙ্গ বাণী বসুর ‘কালিন্দী’  


বাণী বসু।  বাংলা সাহিত্যে এক শ্রদ্ধেয় নাম। তাঁর লেখা মুগ্ধ হয়ে পড়তে হয়। ‘অন্তর্ঘাত’, ‘পঞ্চম পুরুষ’, ‘শ্বেত পাথরের থালা’, ‘মৈত্রেয় জাতক’-এর স্রষ্টার তিন-তিনটি উপন্যাস হাতে এল। দে’জ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত এই উপন্যাসগুলি রচিত হয়েছে ‘মহাভারত’-এর কয়েকটি প্রধান চরিত্রকে কেন্দ্র করে। যেমন সত্যবতীকে কেন্দ্র করে ‘কালিন্দী’। গান্ধারী-কুন্তী-মাদ্রীকে কেন্দ্র করে ‘ক্ষত্রবধূ’। এবং দ্রৌপদীকে কেন্দ্র করে ‘কৃষ্ণা’। 



উপন্যাসগুলি পড়লাম। কিন্তু আলোচনা করব শুধুমাত্র ‘কালিন্দী’কে নিয়ে। কেননা, এই উপন্যাসটি আমার সামনে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। 



আমরা জানি ‘মহাভারত’-এর রচয়িতা ব্যাসদেব। আর‘মহাভারত’ কথাটির অর্থ সাধারণভাবে ভরত বংশের উপাখ্যান। কিন্তু এই সাদামাটা সংজ্ঞায় ‘মহাভারত’কে ধরা কি আদৌ সম্ভব? এই বইটি পড়ার পর আমার মনে হচ্ছে, না-তা কখনই সম্ভব নয়। আর এজন্য কালে কালে এই মহাকাব্যের নানা রকম ব্যাখ্যা হয়ে এসেছে। ব্যাখ্যা কখনই থেমে থাকেনি, আজও থেমে নেই। ‘মহাভারত’ এমনই এক মহাকাব্য যাকে কত ভাবে পুননির্মাণ করা যায়, তারই প্রতিযোগিতা চলে সর্বক্ষণ। তার প্রমাণ,  বাণী বসুর এই উপন্যাস- ‘কালিন্দী’। 



কালিন্দী আসলে একটি নদীর নাম। যমুনা নদীর। আবার কালিন্দী ব্যাস সৃষ্ট মহাভারতের একটি চরিত্রের নাম। যে একজন নারীর নাম। সেই আশ্চর্য নারী, যার জন্ম হয়েছিল প্রাচীন ভারতবর্ষে। তাও আবার ধীবরকুলে। যে ছিল মৎস্যগন্ধা, কিন্তু পরাশর মুনির আশীর্বাদে হয়ে উঠেছিল যোজনগন্ধা।  



বাণী বসু এই উপন্যাসে কোথাও কালিন্দীকে চেদীরাজ উপরিচর বসু এবং শাপগ্রস্তা মৎস্যরূপিণী অপ্সরা অদ্রিকার কন্যা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেননি। কিংবা কোথাও বলেননি ধীবরদের রাজা দাস তাঁকে তার যমজ ভাইয়ের সাথে অদ্রিকার উদরে পেয়েছে। কোথাও বলেননি রাজা বসু পুত্র সন্তানটিকে নিজের কাছে রেখে কালিন্দীকে দাসরাজার কাছে লালনপালন করতে দিয়েছে। তার ভাই মৎস্যরাজ নামে এক ধার্মিক রাজা হয়েছে। সেসব এড়িয়ে বরং তিনি বলেছেন, ‘আসুন আমরা চলে যাই সেই অনির্দিষ্ট, ইতিহাস দ্বারা অনুচ্ছিষ্ট, পুরাতনী ভারতবর্ষে। চতুর্দিকে শুধু জঙ্গল জঙ্গল আর জঙ্গল।’ 



আজ্ঞে হ্যাঁ, মহাভারতে প্রবেশ করতে হলে ওই জঙ্গলে প্রবেশ করতেই হবে। অর্জন করতে হবে প্রাচীন ভারতবর্ষের প্রকৃতি জ্ঞান, ভূগোল জ্ঞান।



বাণী বসু লিখছেন, ‘যখনকার কথা বলছি তখন নদীতমা সরস্বতী তার আগের মহিমা হারাচ্ছে রাজস্থানের মরুপথে, তখনকার মৎস্য রাজ্যের কাছাকাছি আস্তে আস্তে ধারা হারাচ্ছে সে, দুষদ্বতী শুধু এক দুরাগত স্বপ্ননাম। নদীতমা এখন গঙ্গা। আর তার উপনদী যমুনা।খুব সম্ভব প্রাকৃতিক কারণে তাদেরও গতিপথের পরিবর্তন হয়েছে। হস্তিনাপুর অর্থাৎ মোটের ওপর আজকের দিল্লি ও মেরঠের মাঝামাঝি অঞ্চলে যমুনার কূলে এক সমৃদ্ধ নগরী। তার এ কূলে, ও কুলে ধীবরদের বাস। যমুনা সুস্বাদু মাছে ভরা, ধীবররা সেই মাছ ধরে, তাছাড়া খেয়া বায়।’



হাতের লাটাই থেকে মহাভারত নামে কল্পনার ঘুড়ি আকাশে ওড়াতে বাণী বসু এভাবেই সুতো ছাড়তে শুরু করেন। যে ঘুড়ি স্যাটেলাইট হয়ে আমাদের দেখাতে শুরু করে জঙ্গল জঙ্গল আর জঙ্গলের ভেতরে ঘটে যাওয়া বিচিত্র ঘটনার সব চিত্ররূপ। আসুন দেখি কেমন সেই বিচিত্র  চিত্ররূপ- ‘যমুনার স্বচ্ছ নীল জলে সেদিন রুপোর মতো চাঁদ বিম্বিত হয়ে রয়েছে, ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে রুপোর কুচি। বড় শোভা! সেই কলস্বনা যমুনা, যার আরেক নাম কালিন্দী, তার তীরে দাঁড়িয়ে এক রমণী। চাঁদের আলোয় দেখতে পাচ্ছি সে কৃষ্ণা এবং নতনাস, তার দৈর্ঘ্যও খুব বেশি নয়, কিন্তু তা সত্ত্বেও বড়ই চিত্তাকর্ষক সে। ফণাধরা লতার মতো তার কোঁকড়ানো চুল ছড়িয়ে রয়েছে কাঁধের পরে। এদিক ওদিক উলটানো রয়েছে ডিঙি নৌকা, খুঁটি পুঁতে পুঁতে মেলা রয়েছে মাছ ধরার জাল। সবকিছুর ওপর চিকচিক করছে চাঁদের হাসি। রমণী কিছুই দেখছে না, কী এক ভেতরের আবেগে ফুলে ফুলে উঠেছে। ভালো করে দেখলে বোঝা যাবে তার চোখে জল, মুখে খেলা করছে বিচিত্র এক মোনালিসা হাসি। সে খুশি, খুব খুশি, সেই সঙ্গে তাকে ভর করেছে কী এক অস্বস্তি। সেটা শঙ্কার কাছাকাছি।’ 



কার কথা বলছেন ঔপন্যাসিক? কাকে দেখছি আমরা? এত আনন্দের মাঝে কার কী অস্বস্তি, যা শঙ্কার কাছাকাছি?



আমরা যারা মহাভারত জানি, আমাদের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু যারা জানি না, তাদের উদ্দেশে বলি, এ হলেন দাসরাজা ভিল্লর বউ দাসরানি। প্রদীপ জ্বালানোর আগে যেমন সলতে পাকাতে হয়, ধরে নেওয়া যেতে পারে মহাভারতের সলতে পাকানো শুরু এই দাসরানির হাত ধরেই।



দাসরানির কোনও সন্তান ছিল না। তা নিয়ে তার দুঃখ ছিল। কেমন দুঃখ? আসুন দেখে নিই সরাসরি দাসরানির কথায়, ‘এ দিগরে ও দিগরে লোকে কয় বাঁজা বাঁজা, সইতে আর পারিনি রাজা। কে এক ক্ষত্রিয় রাজপুরুষ নদী বাইতে বাইতে যাচ্ছে, ফিরে ফিরে চাচ্ছে। সে যখন আমায় চাইলে, গর্ভধারণ করব একথা স্বপ্নেও ভাবিনি। কিন্তু করলাম তো, তা’লে তো বাঁজা নই! বদনামটুকু তো ঘুচল! এখন মারতে হয় মারো, কাটতে হয় কাটো।’



দাসরানি কাকে বললেন একথা, না তো দাসরাজাকে। কখন বললেন না দাসরাজা যখন তাঁকে ডাকলেনঃ

‘- রানি!

মেঘের মতো ডাক। রানি কেঁপে ঝেঁপে পাশ ফেরে। ধাইকে চক্ষের ইশারায় দূর করিয়ে দিয়ে রাজা মুখখানি রানির চোখ বরাবর এনে জিজ্ঞেস করলে- টেঁপামুখী, বোঁচানাকী, চিরণদাঁতী, উঁচকপালী, এমন মেয়ে কোথায় পেলি?

রানি ক্ষীণ গলায় বললে- কেন রাজা তোমার কাছে! কন্যে তো একেবারে বসানো বাপের মতো হয়েছে। 

শুনে রাজা অট্টহাস্য করল, মুখখানি নাড়িয়ে বলল- ভাঁটার মতো চোখ, কুলোর মতো কান, তবে না রাজার মান! যমুনার জলে তো এমনি যমের চেহারাখানাই দেখি। ভালো চাস তো স্বরূপ কথা ক’।



দাসরানি তো বলেই খালাস। সমস্যায় পড়লেন দাসরাজা। রানির কথা শুনে তিনি মাথা নত করলেন। এরপর ঔপন্যাসিক লিখছেন- ‘আজ না হয় বিজ্ঞান আর চিকিৎসাশাস্ত্র খুঁজেপেতে বার করেছে পুরুষমানুষেরও নানা ত্রুটি আছে যার জন্যে সন্তান হয় না। কিন্তু মানব মগজ আর তার ইনসটিংক্ট কি অতই খাটো যে তার মনে প্রশ্ন উঠবে না, সে বুঝবে না কত ধান্যে কত চাল! কালাকাল জানি না। সেই প্রাচীনকালেও ঠিক ধরতে পারত মানুষ, জেগে জেগে ঘুমোত সব! রানি যদি বাঁজা নয়, তাহলে কে বাঁজা হয়! ভেবে ভেবে রাজার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। এমন সময়ে মেয়ে কেঁদে উঠল। আথিবিধি করে রাজা শিশুকে মায়ের বুকে তুলে দেয়।’



মেয়েটি ক্রমে দাসরাজার নয়নের মণি হয়ে উঠল। রাজা তার নাম রাখল কালিন্দী। সংক্ষেপে কালী। সে যেমন যেমন বড় হয়, তার রূপে বান ডাকে। এ নিয়ে সমাজে কথা হয়। কানাকানি। হাসাহসি। সেসব ঢাকতে দাসরাজা নিজের স্বপক্ষে কৈফিয়ত খাড়া করে, ‘উপরিচর রাজা যদি নিজে এসে চায়, তোরা তোদের বউকে আটকাতে পারবি?’ একথা শুনে প্রজারা একে অপরের মুখ চাওয়া-চাইয়ি করে। তাদের ভাবটা এমন, বাপরে বাপ! চর নয়, চরাচর নয়, একেবারে উপরিচর? প্রজারা চুপ করে যায়, কিন্তু দাসরাজার ভেতরে আগুনের কুণ্ডুলী। লকলক করছে। তিনি ফোঁস করে একেকটা নিশ্বাস ফেলছেন আর তার হলকা ছড়িয়ে যাচ্ছে চারদিকে। 



দাসরাজার এমন রাগের আর একটি কারণ হল, সে বউকে বিশ্বাস করে না। শুধু মনে করে, তাকে নয়, সুন্দরপানা নাগর তাঁর বউয়ের খুব পছন্দের। এতে মনে তার বড্ড জ্বালা ধরে। হয়ত সেই জ্বালা থেকে রেহাই পেতে সত্যি না হলে রূপকথার রাজা উপরিচরের জন্ম হয়। এবং তারই প্রসাদ পরিচয়ে কালী ওরফে কালিন্দী তার আঙিনায় বড় হয়ে উঠতে থাকে। বাণী বসু লিখছেন, ‘লাবণিতে তার অবনি মুরছি যায়। সে এমন লাবণি যে কারওর আর তার বিধর্মী বেজন্ম অরিজিন মনে থাকে না। ঘাড়মোড় ভেঙে তাকে তারা আপন করে, ভালোবেসে ফেলে। বড়দের আদরের দুলালি, কমবয়সিদের উপাস্য, এর ওর তার হিংসের আগুনে ক্রমে ক্রমে যেন রক্তমুখী নীল হয়ে উঠতে থাকে সে।’



এসবের মাঝেই দাসরাজা ছক আঁকতে থাকে, কোনও এক রাজপুরুষ যেমনি তাঁর বংশে পুঁতে দিয়ে গেছে নিজের বীজ, সেও তেমনি পুঁতবে  রাজপুরুষদের বংশে। তাঁর ইচ্ছে, ঝাড়েবংশে উচ্ছন্নে যায় যেন সব। 


এই ভাবনাতেই দাসরাজা কালিন্দীর ব্রেণ-ওয়াশ করে চলেঃ

‘তোর যা রূপ বুঝলি মেয়ে, তুই ওদের ইন্দর দেবতার আসন টলাতে পারিস ইচ্ছে করলে। উর্বশী মেনকা সব নাম শুনিস না? ওরা তোর নখের যুগ্যি নয় জানবি। পৃথিবীর রানি হবি তুই। 

কেমন করে বাপ?

বাপ চতুর হেসে বলে- কে বলছে তোকে মাছ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে। অ্যাদ্দিন যেটুকু করেছিস তাতেই তোর গায়ে আঁশটে গন্ধ হয়ে গেছে। ও কাজ আর করিসনে। আমি তোকে ভিন্ন কাজের কাজি করে তুলব।

তৈরি হয়ে আসে শালগাছের মাঝারি সাইজের ডিঙিনৌকা। এক দুই বড় জোর তিনজন বসতে পারবে। কিন্তু বসবে আরামে। চমৎকার একটি ছই, আগ গলুইয়ের গাছ গলুইয়ের হাঁসের গড়ন। পনেরো বছরে পা দিল কন্যা, কন্যাকে তার বাপের উপহার। বাপের চোখের চতুরালি তার মেয়ের চোখে ঝিলিক তোলে, কিন্তু তার সবখানি সে বুঝলে তো? ’

না, বোঝে না। বোঝে না বলেই প্রথমেই পরাশর মুনির পালটে পড়ে। জন্ম হয় ব্যাসের। তারপর কোথায় দেবব্রতর বউ হবে তা না হয়ে বউ হল দেবব্রতর পিতা বুড়ো রাজা শান্তনুর। ভাগ্য আর কাকে বলে! একেবারে গৌরবময় বংশের মহারানি। জন্ম হয় চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্যর। কিন্তু তারা এমনই যে, ঔপন্যাসিককে বলতে হয়, না হয়েছে রাজবাড়ির ছেলে, আর না হয়েছে জেলেবাড়ির ছেলে। আসলে এরা এক বৃদ্ধের দুর্বল শুক্রকণা।  চিত্রাঙ্গদ বেশিদিন বাঁচে না। বিচিত্রবীর্য জন্মরুগ্ন। কখন কি হয় তার ঠিক নেই। তাহলে সিংহাসনে বসবে কে? গঙ্গাপুত্র দেবব্রত! কিন্তু তা সম্ভব নয়, ভিল্লরাজার কাছে সে যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। রাজা হবে কালিন্দীরই গর্ভজাত সন্তান। 



আমরাও ঠিক বুঝতে পারি না ভিল্লরাজার ভাবসাব! তার হেয়ালিপূর্ণ কথাবার্তা। উদ্দেশ্য। তবে এই উপন্যাসের একেবারে শেষে এসে ভিল্লরাজা আর আমাদের কাছে কোনও সাধারণ চরিত্র হয়ে থাকে না। সমাপ্তিতে বাণী বসু লিখছেন, ‘বৎসরান্তে কুরুরাজপুরীর অন্দরমহলে তিনটি সূতিকাগার শিশুকণ্ঠের কান্নায় মুখরিত হয়ে উঠল। একটি শিশু অন্ধ, একটি শিশু জন্মপাণ্ডুর, আরেকটি ক্ষীণদেহ, শ্যামবর্ণ।

এই শিশুদের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে হস্তিনাপুরে, যদিও কোনও পুরাণ তা নথিভুক্ত করেনি, কুরুবংশ শেষ হয়ে গেল মহর্ষি কৃষ্ণদ্বৈপায়নের বংশ।



বৃদ্ধ জেলেদের সর্দার যাকে মহাভারত দাসরাজা বলে উল্লেখ করেছে, আমরা যার নাম দিয়েছি ভিল্ল, সত্যবতী ওরফে কালীর সেই বাবা যে অনেকদূর পর্যন্ত দেখতে পেত তাতে সন্দেহ নেই। মহাভারত নাই খুলে বলুক, সে মনে মনে পোষণ করত এক অদ্ভুত আকাঙ্ক্ষা। হয়ত আকাঙ্ক্ষা নয়, প্রতিশোধচিন্তা। কল্পনা করা যাক, খবরটা পেয়ে সে তার শাগরেদদের সঙ্গে জেলেপাড়ার চলতি দেশি খেয়ে এমন একটা মত্ত নাচ নেচেছিল যাকে ছোটখাটো একটা প্রলয় নাচনই বলা যায়।’



হ্যাঁ, বলতে দ্বিধা নেই একেবারে মানবজীবনের বাস্তবতাকে সঙ্গী করে বাণী বসু এই দাসরাজা ওরফে জেলেদের সর্দার ভিল্ল চরিত্রটিকে এমন এক আশ্চর্য দক্ষতায় মহীয়ান করে তোলেন যাতে এই দাসরাজা ভিল্লকেই আমাদের মনে হয় মহাভারতের আসল নিয়ন্ত্রক। ঠিক ভিল্ল নয়, ভিল্লর অপমান-ভিল্লর প্রতিশোধস্পৃহা তিল তিল করে গড়ে তোলে এই মহাকাব্যের নতুন ভাষ্য। বাণী বসু সেটাই আমাদের সামনে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন তাঁর এই লেখায়। 



যা পড়ে আমাদের মনে হয়, ভিল্ল না হলে যেন ‘মহাভারত’ হয় না। এই ভিল্লর মধ্যেই লুকিয়ে থাকে মহাভারতের সকল সম্ভাবনা। সকল পরিণতি। যা যুগ যুগ ধরে ব্যাখ্যাকর্তারা ব্যাখ্যা করে আসছেন। আগামীতেও করে যাবেন। মহাভারতের মহাপাঠ কখনও শেষ হবার নয়, আসলে ‘মহাভারত’ সেই মহাকাব্য যার নায়ক সময়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে নিজেকে বিকশিত করে চলে নিরন্তর।

Comments